আমূল বদলের পথে ভারতের ফৌজদারি আইন, তিনটি বিল আনলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ভারতীয়করণের লক্ষ্যে শুক্রবার লোকসভায় তিনটি বিল আনেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গণপিটুনিতে খুনের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড। এমনই আইন আনতে চলেছে কেন্দ্র। আমূল বদলের পথে পা বাড়াল ভারতের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা। বাদল অধিবেশনের শেষ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দিলেন, রাষ্ট্রদ্রোহিতা সংক্রান্ত আইন সম্পূর্ণ ভাবে বাতিল করা হচ্ছে।

লোকসভায় দাঁড়িয়ে শাহ বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শাসনে এই আইনগুলি তৈরি হয়েছিল। তার মূল কারণ ছিল, ভারতের মাটিতে ইংরেজ শাসনের ভিত্তিকে আরও পাকাপোক্ত করা। এর বদলে আমরা নতুন আইন আনছি। ইংরেজদের তৈরি করা আইনের উদ্দেশ্য ছিল দণ্ড দেওয়া, ন্যায়প্রতিষ্ঠা নয়।

শাহ আরও জানিয়েছেন, ১৮৬০ সালের ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’, ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড’ এবং ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ বদলে হতে চলেছে ভারতীয় ন্যায়সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য। তিনটি বিলই স্ট্যান্ডিং কমিটির বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। শাহ জানিয়েছেন, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন সম্পূর্ণ ভাবে বাতিল করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে রাষ্ট্রদ্রোহ কথাটি নেই। এটি ভারতের সার্বভৌমত্ব, একতা এবং অখণ্ডতাকে বিপন্ন করার জন্য ১৫০ নম্বর ধারা দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

গণপিটুনির ঘটনার ক্ষেত্রে তাকে হত্যার পরিভাষার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। যেখানে জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, জন্মস্থান, ভাষা, ব্যক্তিগত বিশ্বাস বা অন্য কোনও কারণে হত্যার ঘটনার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড বা কারাবাসের সাজার সংস্থান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম সাজার সংস্থান রাখা হয়েছে সাত বছর। সর্বোচ্চ ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড। এ ছাড়াও জরিমানাও করা হবে। নয়া প্রস্তাবে ঘৃণা বা উস্কানিমূলক ভাষণকেও অপরাধের শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। যদি কোনও ব্যক্তি ঘৃণা ভাষণ বা উস্কানিমূলক ভাষণ দেন, তা হলে তাঁর তিন বছরের জেলের সাজা প্রাপ্য। সঙ্গে রয়েছে জরিমানা। এ ছাড়া যদি কোনও ধর্মীয় সমাবেশে কোনও অংশ বা শ্রেণির মানুষের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দেন, তাহলে পাঁচ বছরের সাজার সংস্থান রাখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − nine =