কলকাতা: বৃহস্পতিবার শেষ হল পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র পেশ। যদিও বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নির্বাচনের মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা। গত মঙ্গলবার থেকেই উত্তপ্ত অবস্থায় ছিল ভাঙড়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চোপড়া সহ একাধিক জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটে। অশান্তির জেরে তিন জনের মৃত্যুর খবরও প্রকাশ্যে এসেছে। আহত একাধিক ব্যক্তি। ভাঙড় সহ গোটা রাজ্যের এ হেন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলেন সুকান্ত মজুমদার।
পঞ্চায়েতে মনোনয়ন পেশকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার খোঁজখবর নিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই দিন বিকেলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে অমিত শাহের কথা হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। আলোচনাতে ভাঙড় সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অপদার্থতা ও শাসকদলের সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। এছাড়াও বৃহস্পতিবারই নির্বাচন কমিশনেও যাচ্ছে বিজেপির প্রতিনিধি দল।
মনোনয়ন পেশ করার মধ্যেই গত মঙ্গলবার থেকেই ভাঙড়ের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু হয়। এলাকায় বোমাবাজি, চালানো হয়েছে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন পেশের শেষ দিনে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ভাঙড়। শুধু চারদিকে ধোঁয়া, বারুদের গন্ধে এলাকাতে আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়। যদিও অশান্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে দেখা যায়নি বলেও অভিযোগ তোলে বিরোধীরা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসার ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে কেন্দ্রীয় তপশিলি কমিশন। কমিশনের চেয়ারপার্সন অরুণ হালদারের বৃহস্পতিবার দাবি করেন এ রাজ্যের সন্ত্রাসে সবথেকে বেশি আক্রান্ত তপশিলি জাতির মানুষ। তারা তাঁদের পক্ষ থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নোটিস দেওয়া দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। শুক্রবার রাজ্যের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আসছে তপশিলি কমিশনের প্রতিনিধি দল।
যদিও নির্বাচনে মনোনয়ন পেশে হিংসার ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের এক হাত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন হিংসার ঘটনাতে কোথাও তৃণমূল কংগ্রেস জড়িত নয়। তিনি আরও বলেন ২০০৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছোঁয়া জনের মৃত্যু হয়েছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী হয় তা তার জানা আছে।
উল্লেখ্য, হাইকোর্ট নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কোনও জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। স্পর্শকাতর জেলা নিয়ে আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা সংশোধনেরও আর্জি জানিয়েছে কমিশন ও রাজ্য। সেই আর্জি শুনে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। প্রয়োজনে সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে সেই মামলার শুনানি।