প্রকৃতির উপর মানুষের লাগামছাড়া অত্যাচারের ফলই আজ ভুগতে হচ্ছে উত্তরের দুই রাজ্যে। এমনটাই মত পরিবেশবিদদের। বৃষ্টির জেরে হড়পা বান আর ধসের তাণ্ডব চলছে গোটা হিমাচল প্রদেশ জুড়ে। রাজধানী শিমলায় গত কয়েক দিনে মুহুর্মুহু ধস নেমেছে একাধিক জায়গায়। সেই ধসে চাপা পড়ে কেউ নিখোঁজ, কারও দেহ উদ্ধার হয়েছে। কেউ পরিজনদের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। একটানা বৃষ্টি ও হড়পা বানের জেরে হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮১। নিখোঁজ শতাধিক। উদ্ধারকাজ জারি থাকলেও অসহায় পরিস্থিতি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর। ভূমিধসের কারণে বহু পাহাড়ি এলাকায় পৌঁছতেই পারছেন না তারা। হিমচলের মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এই ক্ষতি সামলে উঠতে এক বছর লাগবে।
এদিকে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পড়শি রাজ্য উত্তরাখণ্ডও ভাল নেই। সেখানে সরকারি হিসেবে দুর্যোগের বলি ১০ জন। ধসে নেমে বন্ধ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। কার্যত রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাউড়ি-কোটদ্বার-দুগদ্দা জাতীয় সড়কে যান চলাচল স্তব্ধ। পিপলকোটি ভরেনপানি এলাকায় ঋষিকেশ-বদ্রীনাথ জাতীয় সড়কের একাংশ জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। দুর্যোগের মধ্যেই রাস্তা মেরামতির কাজে নেমেছে প্রশাসন। এদিকে, বৃষ্টিতে হড়পা বান নেমেছে পঞ্জাবেও।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, একটানা না হলেও আগামী কিছুদিন ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকবে বিপর্যস্ত দুই রাজ্যে। রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে একাধিক জেলায় বিপদ বাড়ছে। ভূমিধসে রাস্তা বন্ধ, নদীর জলে উপচে প্লাবিত বহু এলাকা। ঘর-বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বৃহস্পতিবারেও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারেনি রাজ্য। সরকারি হিসেবে এখনও পর্যন্ত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ২১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও পাশাপাশি ১৭৩১ জন নাগরিককে নিরাপদ স্থানে সরাতে পেরেছে প্রশাসন।
প্রকৃতির এই প্রতিশোধ আগামী দিনে আরও বাড়তে চলেছে বলেও সতর্কবাণী জারি করেছেন পরিবেশবিদরা।