কলকাতা: মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অপসারণের নোটিস দিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন সৈকত মিত্র। সেই মামলায় পুরনায় উপাচার্যকে কাজে যোগদানের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের এই নির্দেশে আদালতে কার্যত ধাক্কা খেল রাজ্য। স্বস্তি পেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈকত মৈত্র। তিন সপ্তাহের মধ্যে সৈকত মৈত্রকে কাজে যোগ দিতে বলেছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ।
গত ২৯ জুলাই উপাচার্যকে অপসারণ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল রাজ্য সরকার। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কেন এ ভাবে রাতারাতি নোটিস দিয়ে সরানো হচ্ছে তাঁকে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সৈকত মিত্র। অবিলম্বে ওই বিজ্ঞপ্তি খারিজ করার আবেদন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন সৈকত মৈত্র। তাঁর আবেদনকেই এ দিন মান্যতা দিল আদালত।
২০১৭ সালে সৈকত মৈত্র প্রথম দফায় ম্যাকাউটের উপাচার্য হন। ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় ম্যাকাউটের উপাচার্য পদে তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। ২০২৫ সাল পর্যন্ত উপাচার্যের নিয়োগ পান সৈকতবাবু। কিন্তু মেয়াদ শেষের আগেই রাজ্য সরকার প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সৈকত মৈত্রকে সরিয়ে দেয়। অভিযোগ, উপাচার্যকে অপসারণে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মানা হয়নি। নির্দিষ্ট কারণও জানানো হয়নি। রাজ্য জানিয়েছিল যে ‘শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি’র জন্য এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
আদালতে সৈকত মিত্রের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য ও সৌম্য বসু। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, রাতারাতি রাজ্য কী ভাবে এমন একটি নোটিস দিতে পারে? রাজ্যের তরফে উল্লেখ করা হয়েছিল, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট, ২০০০ অনুসারে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা আলাদা আইন রয়েছে। আইন অনুসারে উপাচার্যের ২ বছরের বেশি মেয়াদ থাকে না। সেই নিয়ম মেনে সরানো হয়েছে বলে দাবি করে রাজ্য।
সওয়াল জবাব চলাকালী উপচার্যের আইনজীবীদের যুক্তি মেনে নিয়েই এ দিন সৈকত মিত্রকে পুনরায় নিযুক্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি। চার বছর ধরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কাজ করেছেন সৈকত মিত্র। ২০২১ সালে তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। এরপর ২৯ জুলাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজ্য সরকার তাঁর অপসারণের নির্দেশ দেয়। সৈকত মিত্র আদালতের দ্বারস্থ হলে রাজ্যের কাছে অপসারণের কারণ জানতে চেয়েছিল আদালত। শুনানি শেষ হওয়ার পর খারিজ করা হল রাজ্যের নির্দেশ।