কলকাতা: বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোডে বেপরোয়া লরির ধাক্কায় ছোট্ট সৌরনীলের মৃত্যু টনক নড়িয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনের। ছোট্ট পড়ুয়ার মৃত্যুর কথা তুলে এবার জাতীয় সড়কের যত্রতত্র কাট-আউট নিয়ে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ সংক্রান্ত মামলায় উদ্বিগ্ন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। গত শুক্রবার সকালে বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোডে বেপরোয়া লরি পিষে দিয়েছিলেন সাত বছরের ছোট্ট সৌরনীল সরকারকে। এদিন মামলার শুনানিতে ওই ঘটনার উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্রাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, ‘আমাদের সকলকে আরও সচেতন হতে হবে।’
বেহালার দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে আদালতে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় অভিযোগ ছিল, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ না হওয়ায় বাড়ছে দুর্ঘটনা। এই বিষয়ে মামলাকারীর আইনজীবী কল্যাণ চক্রবর্তী সোমবার আদালতকে জানান, বারাসাত থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত জাতীয় সড়কে সাধারণ মানুষের পারাপারে সুবিধে করে দেওয়ার জন্য এক কিলোমিটার, দু’কিলোমিটার অন্তর ব্যারিকেড দিচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু তা বেআইনিভাবে করা হচ্ছে। হয় নীচ দিয়ে অথবা উপর দিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে।
এরপরই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, জাতীয় সড়কের এক -দু কিলোমিটার অন্তর ব্যারিকেড দেওয়া যাবে না। এইভাবে ব্যারিকেড দেওয়া জাতীয় সড়ক আইনের পরিপন্থী। এই ব্যাপারে রাজ্য ও কেন্দ্র আলোচনা করে অবিলম্বে তা বন্ধ করার ব্যাবস্থা করবে। প্রয়োজনে রাস্তার নীচ দিয়ে আন্ডারপাস বানাতে হবে। অথবা ফ্লাই ওভার বানিয়ে লোকজন পারাপারের ব্যবস্থা করতে হবে।
আদালত জানিয়েছে, রাস্তার দু’ধারে থাকা অপরিকল্পিত-বেআইনি কাট-আউটের জন্যও পথ দুর্ঘটনা বাড়ছে। এই ধরনের সমস্ত কাট-আউট অবিলম্বে বন্ধ করার পাশাপাশি নতুন করে যাতে বেআইনি কাট-আউট তৈরি না হয় সেদিকেও স্থানীয় প্রশাসনকে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। দুর্ঘটনা এড়াতে সাধারণ মানুষকে আরও বেশি করে আন্ডারপাস ব্যবহারের দিকে উৎসাহিত করার জন্যও প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সড়কে মধ্যে আমডাঙায় থাকা দীর্ঘ ১৭ কিলোমিটার ও জলপাইগুড়ি বেনাগুড়িতে থাকা ৫ কিলোমিটার রাস্তা দ্রুত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এবিষয়ে জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপুরন সংক্রান্ত বিষয়ের জটিলতা দ্রুত মিটিয়ে ফেলার জন্য জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।