বিগত কয়েক বছরে জলবায়ুর পরিবর্তন উদ্বেগ বাড়িয়েছে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে উঠে এসেছে আরও ভয়ঙ্কর তথ্য। আগামী ৫ বছরে নাকি পৃথিবী কার্যত উনুনে পরিণত হবে! চলতি বছরে ক্রমাগত তাপপ্রবাহ অনেকটা তেমনটাই আভাস দিতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে তাপপ্রবাহের জেরে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মৃত্যুর খবর যেভাবে আসতে শুরু করেছে তা কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতে শুরু করেছে পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের।
গত তিন দিনে তাপপ্রবাহের জেরে উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে মৃত্যু হয়েছে ৯৮ জনের। এই ৯৮ জনের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের মৃতের সংখ্যা ৫৪ এবং বিহারে ৪৪। আবহাওয়া দপ্তর আজ এবং কাল চরম তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে ঔরাঙ্গাবাদ, রোহতাস, ভোজপুর, বক্সার, কাইমুর এবং আরওয়াল জেলায়। লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে এই সব জেলায়। কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে পাটনা, বেগুসরাই, খাগারিয়া, নালন্দা, বাঁকা, শেখপুরা, জামুই এবং লখিসরাইয়ে। হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে পূর্ব চম্পারণ, গয়া, ভাগলপুর, জেহানাবাদে।
উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাপপ্রবাহের কারণে অসুস্থ হয়ে ১৫, ১৬ এবং ১৭ জুন যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, জ্বর, শ্বাসকষ্ট এবং অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে ওই তিন দিন চারশোরও বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন বালিয়া জেলা হাসপাতালে। বেশির ভাগ মৃত্যু হয়েছে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে, ব্রেন স্ট্রোক এবং ডায়েরিয়ার কারণে।
বালিয়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমও) জয়ন্ত কুমার জানিয়েছেন, যে সব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগেরই বয়স ৬০ বছরের বেশি। সিএমওর দাবি, জেলায় তাপপ্রবাহের কারণে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা প্রতি দিন বাড়ছে। তাঁর কথায়, ‘তাপপ্রবাহের কারণে রোগীরা কোনও না কোনও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।’ বালিয়ায় গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি পেরিয়েছে। মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার বালিয়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ৫ ডিগ্রি বেশি।
অন্যদিকে, বিহারের পরিস্থিতিও এক। তীব্র গরমে পুড়ছে পূর্ব ভারতের এই রাজ্য। ‘ইন্ডিয়া টুডে’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে তাপপ্রবাহে। রাজ্যের ১৮টি জায়গায় চরম তাপপ্রবাহ চলছে। ৪৪ জনের মধ্যে শুধুমাত্র পাটনাতেই মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। তাঁদের মধ্যে নালন্দা মেডিক্যাল কলেজে মারা গিয়েছেন ১৯ জন এবং পাটনা মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। বাকি ন’জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যের অন্যান্য জেলা থেকে।