হনুমান জয়ন্তীতে অশান্তি রুখতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য চাওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের

রামনবমীর পর হনুমান জয়ন্তী নিয়েও এবার অশান্তির আশঙ্কা। তা প্রতিরোধে সর্তকতামূলক ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের নির্দেশ আদালতের। এরই প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের স্পষ্ট নির্দেশ ‘হনুমান জয়ন্তীকে কেন্দ্র করে রাজ্যের যে সব এলাকায় অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।’ একইসঙ্গে দ্রুত রাজ্যকে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আবেদন করার নির্দেশও দেন তিনি। একইসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ,’এই ধরনের মিছিল কোনও যানবাহন নিয়ে করতে দেওয়া ঠিক নয়। নির্দিষ্ট রুট ঠিক করে মিছিলের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। মুম্বইতে গণেশ চতুর্থীর সময় ব্যারিকেড করে মিছিল নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে যেকোন সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যেতে পারে।’ বুধবার মামলায় শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এও বলেন, ‘চিকিৎসার থেকে প্রতিষেধক ভালো। গতবার গণেশ চতুর্থীর শোভাযাত্রা নিয়ে আমি শুনানি করেছি। গত ৮ – ৯ বছর ধরে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। সামনে হনুমান জয়ন্তী আসছে অশান্তি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।” এরপরই আদালত জানায়, ”রাজ্য পুলিশ না পারলে প্যারা মিলিটারির সাহায্য নিন।’
প্রসঙ্গত, হনুমান জয়ন্তীতে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ডায়মন্ড হারবারের একজন বিচারক রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি দিয়েছেন। তিনি কর্মসূত্রে ডায়মন্ড হারবারে থাকলেও তার পরিবার শ্রীরামপুরে থাকে। তিনি নিজে থানা এবং পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তাদের কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে পাননি। দুই ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে পরিবার শ্রীরামপুরে থাকেন। তিনি নিজের পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আর এই প্রসঙ্গেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম জানান, ‘ যারা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন তাদের পরিবারের কী হবে? মানুষের মনে আস্থা ফেরাবার জন্য রুটমার্চ প্রয়োজন। শান্তি ফেরাবার জন্য কিছু করা দরকার। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও কেন্দ্রীয় টিম আসে। সেরকম কিছু দরকার হলে প্রয়োজনীয় সাহায্য নিন।’
সম্প্রতি রামনবমীর দিন মিছিলকে কেন্দ্র করে হাওড়ার শিবপুর ও ডালখোলায় ছড়িয়ে পড়ে অশান্তি। এখানেই শেষ নয়, পরের দিনও ছড়ায় উত্তেজনা। শিবপুরের পরিস্থিতি শান্ত হতে না হতেই ফের রবিবার হুগলির রিষড়ায় আবারও রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করেই ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। বিজেপি সাংসদ ও সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্ব হওয়া রামনবমীর মিছিলেই হামলার অভিযোগ ওঠে। সেখানেই শেষ পরের দিনই সেই একই কারণে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে হুগলির রিষড়ায়। সেই সব কারণ সামনে রেখেই নতুন করে হনুমান জয়ন্তী নিয়েও তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও শোনা গেছে এমন আশঙ্কার কথাও। দিঘার সভা থেকে শান্তি বজায় রাখার জন্য রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − ten =