তৃণমূলকে সভা করার অনুমতি দেওয়ায় হাইকোর্টে প্রশ্নের মুখে কলকাতা পুলিশ

বুধবার শহিদ মিনারে অভিষেকের বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীদের তরফে দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এমনই নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এদিকে অভিষেকের সভার জন্য যেখানে মঞ্চ বাঁধা হয়েছে, সেখান থেকে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকারীদের ধর্না মঞ্চ ১০০ মিটার দূরে। আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের আশঙ্কা ছিল, তাঁদের আন্দোলন চলকালীন তৃণমূলের সভা হলে যে কোনও ঘটনা ঘটতে পারে। আর সেই কারণে বেশ কিছু শর্ত চাপিয়ে, শেষমেশ সেই সভাতে ছাড়পত্র দিল আদালত।
আদালত জানিয়েছে, সভাস্থলের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিকে সিসিটিভি লাগাতে হবে। এর পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্ট এদিন এ নির্দেশও দেয়, সেখানে আন্দোলনকারীদের মঞ্চকে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলে সভা থেকে আলাদা করতে হবে। পাশাপাশি আদালত এ নির্দেশও দেয়, আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের ধরনা মঞ্চ বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করার পাশাপাশি টিন দিয়ে ঘিরে রাখতে হবে। এর পাশাপাশি আদালতের নির্দেশ সভায় আগত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ও পুলিশ কোনও ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্য করতে পারবেন না।
আদালতে এই মামলার শুনানি চলকালীন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়কে এ প্রশ্নও করে যে, পুলিশ কি তৃণমূলের সভার জন্য অন্য কোনও স্থান খুঁজে পায়নি। তখন তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের একটি ঘটনার উদাহরণ দেন। উত্তরে অ্যাডভোকেট জানান, সভার কারণে কোনও সমস্যা হবে না। এজির মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য পালটা প্রশ্ন তুলে জানান, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ডিএ নিয়ে আন্দোলন করছে। তৃণমূল যুব কংগ্রেস সেখানেই সভা করতে চাইছে। আগেও ধরনা মঞ্চ বোমা দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল, এমনকী সেখানে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে আক্রান্ত হতে হয়। আর এই প্রসঙ্গ টেনে আইনজীবী বিকাশরঞ্জনের প্রশ্ন, ‘সেখানে পুলিশ কী ভাবে তাদের এখানে সভা করার অনুমতি দিল?’ জবাবে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, ‘শহিদ মিনার প্রাঙ্গন বিশাল বড় আকারের মাঠ। পুলিশ ও সেনার অনুমতি নিয়ে সেখানে সভা করা হচ্ছে।’ একইসঙ্গে তিনি এও জানান, ‘পুলিশ সেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারবে।’
এরই প্রেক্ষিতে বিচারপতি মান্থা এদিন এ প্রশ্নও তোলেন, পুলিশে যেচে গোলমাল আহ্বান করতে চাইছে কিনা তা নিয়েও। জবাবে এজি জানান, এতবড় সভার জন্য শহরে অন্য কোনও জায়গা নেই। সভায় ঢোকা ও বেরোনো জন্য পৃথক রাস্তা করা হয়েছে। বিচারপতি মান্থা শুনানি শেষে জানান, ‘কোনওরকমের উস্কানিমূলক মন্তব্য যেন না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। এমন হলে ফল ভোগ করতে হবে। শেষ সুযোগ দিলাম। আগামী দিনে এমন ক্ষেত্রে পৃথক জায়গা দিতে হবে। কোনও ঘটনা ঘটলে পুলিশ কমিশনারকে দায়িত্ব নিতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − nine =