দোলের দিন সাত সকালে হরিদেবপুরের রাস্তায় উদ্ধার হয় এক মহিলার মৃতদেহ। তখনও মৃতার নাম পরিচয় না পাওয়া গেলেও এরপরই তদন্তে নামে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। এরপরই বেশ কিছু তথ্য উঠে আসে কলকাতা পুলিশের হাতে।
লালবাজার সূত্রে খবর, মঙ্গলবারের হরিদেবপুর এই মহিলা মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে এই মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে একটি মধুচক্র এবং পরকীয়ার সম্পর্ক। তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ আধিকারিকেরা এও জানতে পারেন, মৃতার নাম ডালিয়া চক্রবর্তী। তাঁর বাড়ি নরেন্দ্রপুরের নয়াবাদে। সোমবার বিকেলে বাড়িতে থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। স্বামীকে বলেছিলেন, হরিদেবপুরে একজনের কাছে পাওনা ৪ হাজার টাকা আনতে যাচ্ছেন। এরপর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি।
এরপর স্বামীকে পাঠানো কল ও মেসেজের লোকেশন ট্র্যাক করে ডালিয়ার ফোন উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। আর সেই ফোনের কল রেকর্ডই ধরিয়ে দেয় খুনিকে। মঙ্গলবার রাতেই গ্রেপ্তার হয় অরুণাভ নামে এক ব্যক্তিকে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই অরুণাভর কাছেই চার হাজার টাকা আনতে গিয়েছিল ডালিয়া। তাঁকে আটক করে প্রথমে লাগাতার জেরা করে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে একটি ওড়না এবং একটি জুতোও পাওয়া যায় বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর। কলকাতা পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ওই ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ডালিয়া খুন করে অরুণাভ। হরিদেবপুরের জনমোহিনী ঘোষ পার্কে তাঁর ভাড়া ফ্ল্যাটে এই হত্যাটি করে সে। পরে দেহ ফেলে দিয়ে যায় রাস্তার মধ্যে। খুনের পর শ্বশুরবাড়িতে চলে যায় অরুণাভ।
পাশাপাশি অরুনাভ সম্পর্কে এও জানা গিয়েছে যে, তিনি প্রথমে একটি বেআইনি সিকিউরিটি এজেন্সি চালাতেন। এরপর তিনি মধুচক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। দালাল হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন অরুণাভ। ২০২০ সালে কাজের সুবাদেই তাঁর ডালিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই থেকেই দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে অনুমান।
এরপর অরুণাভর হরিদেবপুরের ভাড়া ফ্ল্যাটে প্রায়ই আসতেন ডালিয়া। সোমবারও তাঁর কাছ থেকে মধুচক্রের দালালি বাবদ চার হাজার টাকার জন্য গিয়েছিলেন তিনি। আর সেই নিয়েই তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর শ্বাসরোধ করে ডালিয়াকে খুন করে অরুণাভ।