কটকে ভারত–দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নাটকীয় প্রত্যাবর্তন করলেন শুভমন গিল ও হার্দিক পান্ডিয়া। দু’জনেই চোট সারিয়ে দলে ফিরেছিলেন। তবে প্রত্যাবর্তনের দিনে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি দেখা গেল দুই ক্রিকেটারের ব্যাটিংয়ে। টেস্ট ও ওয়ানডে দলের অধিনায়ক শুভমনকে ঘিরে ভক্তদের উৎসাহ থাকলেও টি-টোয়েন্টিতে তিনি হতাশ করলেন।
মাত্র ২ বল খেলেই ৪ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। অন্যদিকে নেতৃত্ব হারানোর পর চাপমুক্ত হার্দিক পান্ডিয়া ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন। তিনি ২৮ বলে অপরাজিত ৫৯ রান করে ভারতের ইনিংসকে টেনে তোলেন। ভারত প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৭৫ রান তুলেছিল। হার্দিক ছাড়া আর কারও ইনিংস উল্লেখযোগ্য ছিল না। অক্ষর পটেল (২১ বলে ২৩) এবং শিবম দুবে (৯ বলে ১১) তাঁকে সামান্য সঙ্গ দেন। তিলক বর্মা ৩২ বলে ২৬ রান করলেও তাঁর স্ট্রাইক রেট আশানুরূপ ছিল না। তবু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিলক।
অপরদিকে অভিষেক শর্মা (১৭) ভাল শুরু করেও ছক্কা মারতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দেন। সূর্যকুমার যাদবও (১২) চলতি বছরে ফর্মে নেই, আবারও হতাশ করলেন। ফলে মনে হচ্ছিল ভারত অন্তত ১৫–২০ রান কম করল। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের মধ্যে লুঙ্গি এনগিডি ৩১ রানে ৩ উইকেট তুলে নেন। সিপামলা ও ফেরেইরা নেন যথাক্রমে ২ ও ১ উইকেট। তবে ব্যাটসম্যানরা যতটা ব্যর্থ, তার বহু গুণ ভালো পারফর্ম করলেন ভারতীয় বোলাররা। শিশির পড়ার কারণে বোলিংয়ে সমস্যা হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু বারবাটি স্টেডিয়ামে বোলারদের তাণ্ডবই দেখা গেল।
১৭৬ রান তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় বলেই আউট হন কুইন্টন ডি কক। অর্শদীপ সিংহ তাঁর প্রথম স্পেলেই দুই উইকেট শিকার করেন—ডি কক ও ট্রিস্টান স্টাবস। অক্ষর পটেল প্রথম ওভারেই তুলে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এডেন মার্করামকে। শুরুতেই ৪০ রানে ৩ উইকেট পড়ে যায় সফরকারীদের। এরপর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে। মিলার, ফেরেইরা, জানসেন, ব্রেভিস—কেউই ভারতীয় বোলারদের সামনে টিকতে পারেননি। ৫০ রানে ৫ উইকেট পড়ে গেলে ম্যাচের ফলাফল প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। ১২.৩ ওভারেই অলআউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা মাত্র ৭৪ রানে। শেষ ১৮ বলে তারা হারায় শেষ ৫ উইকেট। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে অক্ষর ৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে সবচেয়ে কিফায়তি বোলিং করেন।
অর্শদীপ নেন ২ উইকেট ১৪ রানে। বুমরাহ নেন ২ উইকেট ১৭ রানে এবং আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তাঁর ১০০ উইকেট পূর্ণ হয়। বরুণ চক্রবর্তীও নেন ২ উইকেট ১৯ রানে। হার্দিক ও শিবম দুবে নেন ১টি করে উইকেট। মোট ছ’জন বোলারই উইকেট শিকার করেন। ১০১ রানের বড় জয় পেয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ভারত। একইসঙ্গে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে প্রথম পরীক্ষায় সফল সূর্যকুমারের দল। যদিও অধিনায়ক হিসেবে তাঁর ফর্ম নিয়ে চিন্তা থেকেই গেল। তবে হার্দিক পাণ্ডিয়ার ইনিংস এবং ভারতীয় বোলারদের দাপট ম্যাচের আসল আকর্ষণ হয়ে রইল।

