‘হৈমন্তী সৎ বংশের মেয়ে, কোনও দু নম্বরি করতে পারে না। ওকে ফাঁসানো হতে পারে ’, এই ভাষাতেই মেয়ের পাশে দাঁড়ালেন নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানো অভিনেত্রী তথা মডেল হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের মা বুলা গঙ্গোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনি এও দাবি করেন, ‘মেয়ে কিছু কাজে হয়তো ব্যস্ত। তবে ও সামনে আসবে। তবে কবে আসবে জানি না।’ এদিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে হৈমন্তী যে কোনও ভাবেই জড়িত নন, সে ব্যাপারে ‘ক্লিন চিট’ দেন গোপাল দলপতি। তবে এর পাশাপাশি এও জানান, বিবাহ বিচ্ছেদের পথে হাঁটছেন। এদিকে, শনিবার পর্যন্ত হৈমন্তীর মা বুলা গঙ্গোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন মেয়ে তাঁর কাছে মৃত। কিন্তু, সপ্তাহের শেষ দিনে নিজের অবস্থান একেবারে ১৮০ ডিগ্রি বদল করলেন তিনি। রবিবার তিনি জানান, ‘আমার মেয়ে শান্ত, সৎ। লোকে একদিন বুঝবে ও কত ভালো। অনেক শ্বশুরবাড়ির লোকেরা শান্ত মেয়েকে নিয়েও নিন্দা করে। তার মানে কি সে দোষী!’ শুধু হৈমন্তীই নয়, জামাই গোপাল দলপতিকে নিয়েও বেশ সুর নরম এদিন হৈমন্তীর মায়ের। এর আগে জামাই গোপাল দলপতির ব্যাপারে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গেলেও রবিবার সেক্ষেত্রে সুর নরম করতে শোনা গেল তাঁকে। তিনি বলেন, ‘বিয়ের প্রথম প্রথম গোপাল এই বাড়িতে আসত। এখন তো ওদেরই সম্পর্ক নেই। ওদের মধ্যে সম্পর্ক কেমন ছিল ওরাই বলতে পারবে।’
তবে হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের কণ্ঠে প্রথম উঠে এসেছিল হৈমন্তীর নাম। নিয়োগ দুর্নীতিতে গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রীর যোগ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এরপরেই এই ‘রহস্যময়ী’-কে কেন্দ্র করে রীতিমতো তোলপাড় হয়েছে গোটা রাজ্য। মধ্যবিত্ত বাড়ির এই মেয়ের হাতে দেদার অর্থ কোথা থেকে এল? দামি গাড়ি, ফাইভ স্টার বিলাস, কোথা থেকে এত টাকা আসত তা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন।এদিকে এই বিতর্ক শুরু হওয়ার পর থেকেই উধাও হৈমন্তী। কোথাও কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর। কোথায় অভিনেত্রী এই প্রশ্ন ওঠায় হৈমন্তীর মা জানান, ‘আমি জানি না। কোনও কাজে ব্যস্ত হয়তো। ঠিক একসময় সামনে এসে যা বলার বলবে। ও সৎ বংশের মেয়ে। কোনও দুনম্বরি করতে পারে না। একদিন সকলেই বুঝতে পারবে ও কতটা সৎ ছিল।’ এদিকে হৈমন্তীর চোখ ধাঁধানো লাইফস্টাইল যতই চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়াক, তাঁর মায়ের দাবি তিনি কোনও মতে দিন চালাতেন। একইসঙ্গে এও জানান, ও প্রথমে চাকরি করত। পরে সিনেমা-সিরিয়ালে কাজ করত। আর একটা পার্লার ছিল বলে শুনেছি। কোনওদিন যাইনি। এই করেই কোনওমতে পেট চলত ওর।’
এদিকে বেহালা মুচিপাড়া মোড় ৩৫৯ রাজা রামমোহন রায় রোডে যে দোতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন হৈমন্তী ও গোপাল দলপতি ওরফে আরমান সেখানকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, একেবারে অন্য কথা। রাত বাড়লেই হৈমন্তীর ফ্ল্যাটে ফূর্তির ফোয়ারা। আনাগোনা শুরু ‘রহস্যময়’ নারী ও পুরুষের। এককথায় উদ্দাম নাইট লাইফ। অভিনেত্রী তথা মডেল হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে সারারাত ধরে চলত পার্টি। আবার কখনও ফ্ল্যাটের জানালা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলা হতো আবর্জনাও। অভিনেত্রীর এই লাইফস্টাইলে রীতিমতো বিরক্ত ছিলেন প্রতিবেশীরা। জানুয়ারিতেই গোপালকে শেষবারের মতো বাড়িতে দেখা গিয়েছিল। হৈমন্তীকেও দেখা যায়নি।