মর্মান্তিক ঘটনা। প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডে কাজে গিয়ে আগুনে পুড়ে মারা গেল গোঘাটের তিনজন ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে বেসরকারি হাসপাতালে আগুন লেগে ৫ জন মৃতের মধ্যে রয়েছে গোঘাটের বাসিন্দাদের নাম। এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি গোঘাটের এক বাসিন্দার। সরস্বতী পুজোর জোগাড়ে গিয়ে ছিল তারা। সেখানেই আগুন লেগে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় চিকিৎসক বিকাশ হাজরা ও তার স্ত্রী শ্রেয়া হাজরা-সহ ৫ জনের। দুই চিকিৎসক দম্পতির গ্রামের বাড়ি গোঘাটের নকুন্ডায়। কর্মসূত্রে ধানবাদেই থাকতেন তারা। তাদের পাশাপাশি মৃতদের মধ্যে রয়েছে গোঘাটের নকুন্ডা গ্রামের আরোও এক জনের। তবে গোঘাট থেকে যাওয়া বাকি একজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে দাবি পরিবারের সদস্যদের। এই বিষয়ে নিখোঁজ শম্ভু চরণ সিংয়ের বাবা দিলীপ সিং জানান, সরস্বতী পুজোর দিন সকালে কথা হয়েছিল। তারপর আর কথা হয়নি। ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে এখানকার বিখ্যাত ডাক্তার চন্ডী হাজরার ছেলে বিকাশ হাজরার নার্সিংহোমে সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে ডাক্তারের ভাগ্নার সঙ্গে গিয়েছিল। এদিন সকালে মাঠে যাওয়ার সময় খবর পাই। যাদের সঙ্গে গিয়েছিল সেখানে যাই। বার বার ফোন করেও খবর পাওয়া যায়নি। মৃতদের মধ্যে রয়েছে গোঘাটের নকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা তারা সামুই। জানা গিয়েছে, চিকিৎসকের গ্রামের বাড়ি নকুন্ডায়, সেই পরিচিতির সূত্রে ধানবাদে প্রতি বছর সরস্বতী পুজোর জোগাড়ে যান গোঘাটের বেশ কয়েকজন। এবছরেও শম্ভু চরণ সিং, বাবলু সামুই ও সুনীল মণ্ডল পুজার আগের দিন ধানবাদে যায়। বাবলু বাবু শুক্রবার বাড়ি ফিরে আসে। কিন্তু বাকিরা সেখানেই রয়ে যায়। সেখানেই তারা সামুই আয়ার কাজ করত। তার পর রাতে হঠাৎ আগুন। দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তারা সামুই সহ ৫ জনের। এই বিষয়ে বাবলু সামাই বলেন, সরস্বতী পুজো পর বাড়ি চলে আসি। সকালেই ফোনে শুনলাম আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পিসিমা তারা সামুইও মারা গেছে। এখান থেকে সুনীল মণ্ডল ও শম্ভু চরণ সিং গিয়েছিল। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সুনীল মণ্ডল নাকি আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে, কিন্তু শম্ভু চরণ সিং এর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে দাবি পরিবারের। দুশ্চিন্তায় পরিবারের লোকজন। শম্ভুর মা চায়না সিং বলেন, ছেলের সঙ্গে সরস্বতী পুজো দিন রাতে কথা হয়েছিল। পুজোর জোগার করার জন্য যায়। সকালে আগুনে পুড়ে যাওয়ার কথা শুনি। ছেলের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। সবমিলিয়ে ভিন্ন রাজ্যের নার্সিংহোমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গোঘাটে চিকিৎসক দম্পতি ও আর একজন মহিলার মৃত্যুর খবরে শোকাহত পরিবার ও এলাকার মানুষ।