সভাপতি নির্বাচনের আগে বিরাট ধাক্কা খেল কংগ্রেস। দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ (Ghulam Nabi Azad)। শুধু সব পদ ছাড়াই নয়, কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আগে রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে রীতিমতো বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন তিনি। আজাদের দাবি, রাহুল সহ-সভাপতি হওয়ার পর দলের গঠনতন্ত্র ভেঙে গিয়েছে। যে সিনিয়র নেতাদের পরামর্শ ইউপিএ (UPA) সরকার সফল হয়েছিল, সেই সিনিয়রদেরই উপেক্ষা করেছেন রাহুল।
পাঁচ পাতার পদত্যাগপত্রে গুলাম নবি লিখেছেন, ‘গোটা সাংগঠনিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াই একটা প্রহসন। দেশের কোথাও সংগঠনের কোনও পর্যায়ের নির্বাচনই হয়নি।’ এর পরই কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধিকে নিশানা করে বর্ষীয়ান নেতা লিখেছেন, ‘এই সব ঘটেছে, তার কারণ, গত আট বছরে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি এক জন ‘অপরিণত’ ব্যক্তিত্ব।’ এমনকী, বিভিন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির জন্যও রাহুলকেই কার্যত কাঠগড়ায় তুলেছেন গুলাম।
বস্তুত নিজের ইস্তফাপত্রে রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন তিনি। আজাদের মতে দেশে কংগ্রেসের বর্তমান দুর্দশার জন্য মূলত রাহুলই দায়ী। এখানেই থামেননি আজাদ। দীর্ঘ চিঠিতে তিনি আরও দাবি করেছেন, ‘২০১৪ সালের পর রাহুল গান্ধির (Rahul Gandhi) নেতৃত্বে কংগ্রেস দুটি লোকসভা নির্বাচনে লজ্জাজনকভাবে হেরেছে। ৪৯টি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে ৩৯টি হেরেছে। এর মধ্যে কংগ্রেস নিজের দমে মাত্র ৪টি রাজ্যের বিধানসভা ভোটে জিতেছে। আর ৬ বার জোটসঙ্গীদের সঙ্গে ক্ষমতায় এসেছে। দুঃখজনকভাবে আজ কংগ্রেস মাত্র দুটি রাজ্যে ক্ষমতায়। আর দুটি রাজ্যে শাসক জোটের প্রান্তিক শক্তি।’ আজাদ বলছেন, ‘২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর দলের অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। এর মধ্যে রাহুল দলকে বিপদে ফেলে ইস্তফা দিলেন। তার আগেই অবশ্য দলের সেইসব সিনিয়র নেতাদের তিনি অপমান করে ফেলেছেন, যাঁরা নিজেদের জীবন দিয়ে দিয়েছেন দলের হয়ে।’
আজাদের এই বিস্ফোরক চিঠি আগামী দিনে কংগ্রেস তথা জাতীয় রাজনীতিতে চর্চার বিষয় হতে চলেছে, তাতে সংশয় নেই। আসলে বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতা দীর্ঘদিন ধরেই কোণঠাসা ছিলেন। অনেক দিন ধরেই ইস্তফা দেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন তিনি। দলের অন্দরে থেকে যে অভিযোগগুলি প্রকাশ করতে পারছিলেন না, ইস্তফা দেওয়ার পর সেগুলিই বলে দিলেন।