মকর সংক্রান্তির প্রাক্কালে পুণ্যার্থীর ঢল গঙ্গাসাগরে

কোভিডের কারণে দু’বছর মকর সংক্রান্তিতে এই ভিড়টা চোখে পড়েনি গঙ্গাসাগরে। তবে অনুমান করা হয়েছিল এবার ঢল নামবে পুণ্যার্থীদের। আর সেই অনুমান যে ১০০ শতাংশ সত্য তার প্রমাণ মিলল শুক্রবারেই। মকর সংক্রান্তির পুণ্যতিথির প্রাক্কালে লাখ লাখ পুণ্যার্থীকে ভিড় নজরে এল গঙ্গাসাগরে। পুণ্যস্নানের পাশাপাশি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, গঙ্গা আরতি, বাংলার পাঁচ মন্দিরের মডেল এবার বিশেষ আকর্ষণ পর্যটকদের কাছে।

এবারের মকর সংক্রন্তি উপলক্ষে এই গঙ্গা সাগর মেলার শুরুতেই আশা করা হয়েছিল, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি সংখ্যক পুণ্যার্থী গঙ্গাস্নানে আসবেন। সেই চেনা চিত্র দেখা মিলল শুক্রবার সকাল থেকেই। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তৎপর প্রশাসনও। সকাল থেকেই সাগর মেলা চত্বরে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন লাখ, লাখ পুণ্যার্থী। এদিকে শনিবার বিকেল থেকে মকর সংক্রান্তির পূণ্যস্নান শুরু হবে। কিন্তু তার আগেই পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির প্রাঙ্গণে। মকর সংক্রান্তি তিথির আগেই স্নান সমাপন করে কপিলমুনির মন্দিরে পুজো দিতেও দেখা যায় তাঁদের।

এখানে বলে রাখতেই হয়, বৃহস্পতিবারই কচুবেড়িয়ার ঘাট থেকে মেলার রাস্তার দখল নিয়েছিলেন পুণ্যার্থীরা। দুই কিলোমিটার আগেই গাড়ি থেকে নেমে মালপত্র মাথায় করে হেঁটেই মেলার পথ ধরেছেন অনেকে। এদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশানের তরফ থেকে কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না। পুণ্যার্থীদের যাতে কোথাও কোন রকম অসুবিধা না হয় সেদিকে কড়া নজর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের। বৃহস্পতিবার নজরে আসে কপিল মুনির আশ্রমে পুজোর লাইন চলে যায় সমুদ্রতট পর্যন্ত। এদিকে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড গড়ে চলছে ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। শনিবার দিন বিশেষ নজরদারির ব্যাবস্থা করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রায় ৩০ লাখের মতো পুণ্যার্থী এবার মেলায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ১১০০ সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা মেলা চত্বর। পাশাপাশি সাগরে পুণ্য স্নানে দুর্ঘটনা এড়াতে মোতায়েন এনডিআরএফ ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম।

এ বছরই প্রথমবার হরিদ্বার-বারাণসীর আদলে গঙ্গা আরতির আয়োজনও করা হয়েছে গঙ্গাসাগরে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় কপিল মুনির মন্দির থেকে একটি শোভাযাত্রা শুরু হয়। পৌঁছয় গঙ্গাসাগরের তিন নম্বর ঘাটে। ৬ থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নাচ-গানের মাধ্যমে গঙ্গা আরতি হয়। এবারের গঙ্গা আরতির জন্য অযোধ্যা থেকে মহান্তদের নিয়ে আসা হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য মেলায় থাকছে ২২৫০টি সরকারি বাস, ৫০০ বেসরকারি বাস চালু থাকছে। ৪টি বার্জ, ৩২টি ভেসেল, ১০০টি লঞ্চ এই সময়ে চলবে। এক টিকিটে গঙ্গাসাগরে যাওয়া-আসা করা যাবে। ১০টি ফায়ার স্টেশন, ২৫টি দমকলের ইঞ্জিন মোতায়েন করা হয়েছে বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা প্রশাসন সূত্রে খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − 15 =