দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার পথে এগোল ভারত-অস্ট্রেলিয়া (India-Australia)। বিপুল অঙ্কের বাণিজ্যচুক্তি, যৌথভাবে একাধিক প্রকল্প নিয়ে পাকাপাকি সিদ্ধান্তের পাশাপাশি ভারতের বহুমূল্য ঐতিহাসিক সামগ্রী ফেরাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রধানমন্ত্রী মোদির (PM Modi) সঙ্গে ভার্চুয়াল দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন (Scott Morrison) কথা দিয়েছেন, মোট ২৭ টি সামগ্রী ফেরানো হবে, যার মধ্যে অধিকাংশই হিন্দু স্থাপত্যকীর্তি বলে জানা গিয়েছে। সেসব সামগ্রী খতিয়ে দেখেছেন মোদি। সোমবার দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকের পর সবটা জানালেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
মোদি-মরিসনের আলোচনায় সবচেয়ে আগ্রহের বিষয়, পুরাতন স্থাপত্যকীর্তিগুলি (Artefacts) ফেরানো। অস্ট্রেলিয়ায় থাকা ২৯ টি সামগ্রী ফেরানো হবে ভারতে। তার মধ্যে বেশিরভাগই শিব, বিষ্ণুমূর্তি, রয়েছে বেশ কিছু জৈন স্থাপত্যকীর্তি। সেসব দেশে ফেরার অপেক্ষায় সকলে।
২০২০ সালের জুনে প্রথমবার ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে এ ধরনের সম্মেলন হয়েছিল। তাতেই উভয়ের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়। সোমবার মোদি-মরিসন বসলেন দ্বিপাক্ষিক দ্বিতীয় বৈঠকে। এই মুহূর্তে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উত্তপ্ত বিশ্ব। আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু এটিই। ফলে মোদি-মরিসনের বৈঠকেও সেই বিষয়টি উঠে আসবে, তা প্রত্যাশিত ছিল। যদিও দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনায় সরাসরি যুদ্ধের প্রসঙ্গ আসেনি বলেই খবর। প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় (Pacific region) দু’দেশের তরফে নিরাপত্তা বাড়ানো নিয়ে কথা হয়েছে বলে খবর। মানবিক খাতে সাহায্য বাড়ানো হবে।
এছাড়া গণমাধ্যম নিয়েও দু’দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। বিদেশসচিব শ্রিংলা জানিয়েছেন, প্রসার ভারতী, ডিডি ইন্ডিয়া, ডিডি নিউজের (DD News) সঙ্গে অস্ট্রেলীয় চ্যানেলের চুক্তি অনুযায়ী, দু’দেশের সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান হবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হবে উভয় দেশেই। বলা হচ্ছে, এবারই দু’দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অঙ্কের চুক্তি হয়েছে।
বিগত কয়েক বছরে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সুসম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, শিক্ষা ও উদ্ভাবন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-এই সমস্ত ক্ষেত্রে আমরা নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করছি।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘এটি আমাদের সম্পর্কের নিয়মিত পর্যালোচনার জন্য একটি কাঠামোগত ব্যবস্থা প্রস্তুত করবে। বিগত কয়েক বছরে আমাদের সম্পর্ক উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, শিক্ষা ও উদ্ভাবন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-এই সমস্ত ক্ষেত্রে আমরা নিবিড়ভাবে সহযোগিতা করছি।’ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, ‘আমাদের অঞ্চল ক্রমবর্ধমান পরিবর্তন এবং অনেক চাপের সম্মুখীন হচ্ছে। আমি মনে করি আমাদের কোয়াড নেতাদের আহ্বান ইউক্রেনের ভূখণ্ডে রাশিয়ার বেআইনি অভিযান নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ দিয়েছে।’