কলকাতা: প্রচার, সচেতনতা কোনওটাতেই আশানুরূপ কাজ হয়নি।
তবে পরিবশে ও জন স্বাস্থ্য রক্ষায় এবার কড়া পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। পাতলা, ফিনফিনে প্লাস্টিকের ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী রত্না দে নাগ মঙ্গলবার বিধানসভায় জানিয়েছেন, ৭৫ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক বিক্রি বা ক্রয় করা যাবে না বলে আগেই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। কিন্তু এরপরেও যদি কেউ নিষিদ্ধ প্লাস্টিক বিক্রি ও ব্যাবহার করে, তবে বিক্রেতা ও ব্যবহারকারীকে ৫০০ টাকা ও ৫০ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। শুধু প্লাস্টিকের ব্যাগ নয়, ব্যবহার করা যাবে না প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্রও। যেমন এয়ার বাড, আইস্ক্রিমের স্টিক, চামচ, ছুরি ইত্যাদি। এমনকী থার্মোকলের থালা-বাটিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বেলুনের জন্য প্লাস্টিকের লাঠি, প্লাস্টিকের পতাকা, আইসক্রিমের স্টিকস, পলিস্টেরিন (থার্মোকল), কাপ, গ্লাস, কাঁটাচামচ, চামচ, ছুরি, নল, মিষ্টির বাক্সের চারপাশে মোড়ানো প্লাস্টিক ব্যবহার ও বিক্রি করা যাবে না।
এ দিন বিধানসভার অধিবেশনে কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকারের প্রশ্ন করেন, ৭৫ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক উৎপাদনকারীদের উৎপাদন বন্ধ করার জন্য কী কী ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে? এর উত্তরে মন্ত্রী রত্না দে নাগ জানিয়েছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ একবার ব্যাবহারযোগ্য প্লাস্টিকের জিনিসপত্র উৎপাদন, মজত, বিতরণ, বিক্রি ও ব্যাবহার নিষিদ্ধ করার জন্য আটটি বহুল প্রচারিত বহুল সংবাদপত্রে বিঞ্জপ্তি দিয়েছে।’ এ ধরনের কোম্পানি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন ২০২২ এর মধ্যে চিহ্নিত এসব উৎপাদন মজুত, বিতরণ, বিক্রি এবং ব্যবহার বন্ধ করতে বলা হয়েছে। পশ্চিবঙ্গে ১৯১টি প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ উৎপাদনকারী কারখানা চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদেরকেও ৭৫ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক ক্যারীব্যাগ উৎপাদন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদের রেকর্ড এবং সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, এ রাজ্যে প্লাস্টিকের উৎপাদক ও ব্র্যান্ড মালিকের সংখ্যা ১১৯৪ টি। তাদেরকে ৭৫ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের উৎপাদন ও ব্যাবহার না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্লাস্টিকজাত সামগ্রী উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি পরিদর্শনের কাজ শুরু করা হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, এই নির্দেশ না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কোনও কারখানা বা দোকানে প্লাস্টিক মজুত থাকে তবে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। শুধু তাই নয়, বিক্রেতা ও ব্যবহারকারীকে ৫০০ টাকা ও ৫০ জরিমানা দিতে হবে।