মণিপুরে আবার সংঘর্ষ, নিহত তিন, পাল্টা হামলায় পুড়ল কুকি গ্রাম

ফের অশান্ত মণিপুর। আবার ঘটল সংঘর্ষ এবং মৃত্যুর ঘটনা। শুক্রবার রাতে বিষ্ণুপুর জেলার মেইতেই অধ্যুষিত কাওয়াকটা এলাকায় সশস্ত্র কুকি জঙ্গিদের হামলায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। পাল্টা হামলায় ওই এলাকায় কুকিদের কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর।

মণিপুরের সাম্প্রতিক হিংসাপর্বে মায়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী পিডিএফ-এর ভূমিকা নিয়েও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। বিষ্ণুপুর-চূড়াচাঁদপুর এলাকায় মেইতেই গ্রামগুলিতে খুন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের একাধিক ঘটনায় ওই গোষ্ঠী জড়িত দাবি পুলিশের। কাওয়াকটায় হামলার ঘটনাতেই পিডিএফ-সংশ্রবের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ রুখতে যে বাফার জোন তৈরি করা হয়েছে, শুক্রবার রাতে সেই সীমানা টপকিয়েই কয়েকজন ঢুকে পড়ে এবং গুলি চালায়। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে ব্য়াপক সংঘর্ষ শুরু হয়। ভাঙচুর, একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।

দুই দিন আগেও সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে মেতেই গোষ্ঠীর বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে বিষ্ণুপুরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। অভিযোগ, থানা ও নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে অস্ত্র লুঠ করার চেষ্টা করেছিল বিক্ষোভকারীরা। ওইদিনের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়। এরপরই পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফলে ফের একবার কড়া কার্ফু জারি করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের তপসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।

মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জো-সহ কয়েকটি তপসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 13 =