ব্রিটিশ শাসনের স্মৃতিবাহী সেন্ট জর্জ ক্রস আর নয়। এ বার থেকে ভারতীয় নৌবাহিনীর পতাকায় থাকবে ছত্রপতি শিবাজির ‘রাজমুদ্রা’। শুক্রবার কেরলের কোচিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতীয় নৌবাহিনীর সেই নয়া পতাকার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সঙ্গে বললেন, ‘এ বার গোলামির চিহ্ন থেকে মুক্তি পেল নৌসেনার পতাকা।’
সেই সঙ্গে মোদি জানান, ঔপনিবেশিকতার স্মৃতিবাহী পতাকা বদল করে মরাঠা শাসক ‘ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের রাজমুদ্রা’ প্রতীকযুক্ত পতাকা নৌসেনার হাতে তুলে দিতে তিনি গর্ব অনুভব করছেন।এদিন কোচির ওই অনুষ্ঠান থেকেই ভারতীয় নৌসেনার হাতে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত তুলে দেন মোদি। আইএনএস বিক্রান্ত-এও নৌসেনার পুরনো পতাকার বদলে এই নতুন পতাকা থাকবে।
সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই নৌসেনার পতাকায় শোভা পেত সেন্ট জর্জ ক্রস (Saint George Cross)। যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের প্রতীক বলেই মনে করেন অনেকে। আগের পতাকাটি ছিল সাদা রংয়ের। মাঝখানে লাল রং দিয়ে ‘ক্রস’টি আঁকা ছিল। ক্রসের একপাশের কোণে ছিল ভারতের তেরঙ্গা পতাকা। আর ক্রসের মাঝখানে ভারত সরকারের প্রতীক অশোকস্তম্ভ। নতুন পতাকায় জাতীয় পতাকাটি রয়েছে যথাস্থানে। তবে সেন্ট জর্জ ক্রসটি উধাও। তার বদলে পতাকার একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের ‘রাজমুদ্রা’।
নৌসেনার সদ্য-বাতিল পতাকার রং ছিল সাদা। তাতে লাল রঙের ‘ক্রস’ চিহ্ন। সেই লাল ‘ক্রসের’ মধ্যে ছিল ভারতের জাতীয় প্রতীক— অশোক স্তম্ভ। পুরনো পতাকার এক কোণে ছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। ওই কোণটিতেই ব্রিটিশ শাসনে ‘রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভি’র পতাকায় শোভা পেত ‘ইউনিয়ন জ্যাক’।
১৯৫০ সালের পর থেকে এই নিয়ে চার বার রং এবং ধাঁচ বদলাল ভারতীয় নৌসেনার পতাকা। ঘটনাচক্রে, মোদির আগে কোনও রাষ্ট্রনেতা ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনীর কোনও শাখায় ‘গোলামির চিহ্ন’ নিয়ে মন্তব্য করেননি। ঘটনাচক্রে, বিজেপির প্রথম প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানাতেও এক বার ভারতীয় নৌবাহিনীর পতাকা বদল করা হয়েছিল।