আততায়ীর গুলিতে নিহত জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, শনিবার জাতীয় শোক ঘোষণা করলেন শোকার্ত মোদি

প্রয়াত জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। ভরা সভায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি। খবর ছড়িয়ে পড়তেই একপ্রকার স্তব্ধ বিশ্ব।

শুক্রবার পশ্চিম জাপানের নারা শহরে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় আচমকাই তাঁর উপরে গুলি চালায় এক আততায়ী। মঞ্চের উপরেই লুটিয়ে পড়তে দেখা যায় আবেকে। প্রাথমিকভাবে জানা যায় আবের (Shinzo Abe) বুকে গুলি লেগেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । জাপানের সময় সকাল সাড়ে এগারোটায় (ভারতীয় সময়ে সকাল ৮টা ২৯ মিনিটে) ওই হামলা চালানো হয়। গুলি চালানোর সঙ্গে বুকে হাত দিয়ে মঞ্চেই লুটিয়ে পড়তে দেখা যায় জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে।

হামলাকারীর নাম টেটসুয়া ইয়ামাগামি। ইতিমধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জাপানের নৌসেনার প্রাক্তন কর্মী ছিল সে। নিজের হাতে তৈরি বন্দুক নিয়ে মাত্র ১০ ফুট দূর থেকে আবের বুকে গুলি চালায় সে। কেন এই কাজ করল সে? উত্তরে ইয়ামাগামির বক্তব্য, আবের নীতি তার পছন্দ নয়। তাই সে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।

‘প্রিয় বন্ধু’ শিনজো আবেকে হারিয়ে ‘শোকার্ত’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে শনিবার এক দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন মোদি। শিনজোর মৃত্যুর পর টুইটারে এ কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

শিনজো সম্পর্কে টুইটারে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধুর প্রয়াণে মর্মামত। দুঃখপ্রকাশের ভাষা নেই। বিশ্বের রাজনীতিবিদদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন। অসামান্য নেতা উনি। অসাধারণ প্রশাসক ছিলেন। জাপানের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।’ জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথাও টুইটারে তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। লিখেছেন, ‘আবের সঙ্গে আমার যোগাযোগ বহু বছর ধরে। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ওঁর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। তার পর থেকে সেই বন্ধুত্ব বজায় ছিল। অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে ওঁর তীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টি আমার উপর গভীর ছাপ ফেলেছে।’

মোদি আরও লিখেছেন, ‘আমার সাম্প্রতিক জাপান সফরেও ওঁর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল। বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। উনি বুদ্ধিমান ছিলেন। ওঁর পরিবার ও জাপানের মানুষের প্রতি সমবেদনা।’

উল্লেখ্য, জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিদিন প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দেশের সমর নীতিতে পরিবর্তন এনে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক মজবুত করেছিলেন তিনি। চিনা আগ্রাসনের বিপদ যে কতটা, তা তিনি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন। শুধু তাই নয়, জাপানের অর্থনীতিকে মজবুত করতে বেশ কিছু ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ করছিলেন তিনি, তা পরিচিত লাভ করে ‘অ্যাবেনমিক্স’ নামে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three − two =