রীতি মেনে বৈশাখ মাসের শুরুতেই পুরাতন মালদায় শুরু হল ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরা অনুষ্ঠান

প্রায় ৫০ বছরের পুরনো প্রাচীন রীতি মেনে বৈশাখ মাসের শুরুতেই পুরাতন মালদায় শুরু হল ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরা অনুষ্ঠান। হিন্দু শাস্ত্র মতে চামুন্ডা কালীর মুখো এবং বুড়ি কালীর মুখো পুজোর পাশাপাশি গম্ভীরা নাচ অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার রাতে এই গম্ভীরা অনুষ্ঠানকে ঘিরে পুরাতন মালদা পুরসভার বাচামারি এলাকায় ব্যাপক ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। আর এই গম্ভীরা নাচ ও গান এবং পূজার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন পুরাতন মালদা পুরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ, ভাইস চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম, সংশ্লিষ্ট পুরসভা কাউন্সিলর বিভূতি ঘোষ সহ বিশিষ্টজনেরা। প্রাচীন নিয়ম মেনে এই গম্ভীরা অনুষ্ঠানের মধ্যে হরিলুটের মাধ্যমে প্রসাদ বিলি করেন থাকেন ভক্তেরা। আর এদিনের গম্ভীরা নাচকে  কেন্দ্র করে বাচামারি দুই প্রান্তে, দুই কালী মন্দিরে প্রচুর মহিলা ভক্তদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। এবং বাতাশা হরিলুট হয় যা কয়েকশো বছর ধরে এই পরম্পরা চলে আসছে।

সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রবীনদের কথায়, গম্ভীরা হল শিবের আরাধনা৷ তার অন্যতম অংশ চামুণ্ডা মুখা নৃত্য৷ প্রতি বছর বৈশাখের দ্বিতীয় দিন রাতে মশাল নাচের মাধ্যমে এই উৎসবের সূচনা হয়৷ সূচনা উৎসব শেষ হয় চামুণ্ডা মুখা নৃত্যের মাধ্যমে৷ কালের নিয়মে এই লোক সংস্কৃতির অনেক ধারা বিলুপ্তপ্রায়৷ তার মধ্যেও গম্ভীরার প্রাচীন প্রথাকে বাঁচিয়ে রেখেছে পুরাতন মালদা ব্লকের বেশ কিছু এলাকা৷ বাচামারি তার মধ্যে অন্যতম৷ শনিবার রাতে বাচামারি এলাকায় সেই মুখোশ নৃত্যে মেতে উঠেছিল আট থেকে আশি৷ এলাকার মানুষজন মনে করেন, এদিন মা চামুণ্ডার দুই রূপ, বুড়ি কালী ও চামুণ্ডা কালীর মিলনের দিন৷ পাশাপাশি দুই পাড়ায় থাকা দুই বোনের মন্দিরই৷ দুই বোনের মিলন উৎসবের সাক্ষী হতে স্থানীয় মানুষজনের পাশাপাড়ি ভিড় করেছিলেন দূর থেকে আসা অনেকেই।

সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রবীণদের কথায়, বহুকাল আগে থেকেই বছরের এই দিনটিতে বুড়ি কালী ও চামুণ্ডা কালীর মিলন হয়ে আসছে৷ কোনও এক সময় দুই বোনের মুখোশই মহানন্দা থেকে উদ্ধার হয়েছিল৷ দেবীর আদেশেই বৈশাখের এই দিনটিতে দুই বোনের পুজো হয়ে থাকে৷

পুরাতন মালদা পুরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ বলেন, প্রাচীন নিয়ম মেনেই বাচামারি এলাকার চামুণ্ডা কালী এবং বুড়িকালীকে ঘিরে গম্ভীরা অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছে নিষ্ঠার সঙ্গে। বহু মানুষ শনিবার রাতে ভিড় করেন। আর এই মালদার গম্ভীরাকে ঘিরে নানান কথা কথিত রয়েছে। ভক্তদের বিশ্বাস আজও মনের মধ্যে রয়েছে। তাই এই গম্ভীরা অনুষ্ঠান দেখতে রাতভর বহু মানুষ ভিড় করে থাকেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + 11 =