শুভাশিস বিশ্বাস
কলকাতা: বিরাটির মহাজাতি নগরের পর এবার নিউটাউনের বহুতল। দু’দিনের মাখায় ফের অগ্নিকাণ্ড শহরে। তবে বিরাটির ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার নিউটাউনের অগ্নিকাণ্ডে এক বৃদ্ধা জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এদিন নিউটাউনের একটি বহুতল আবাসনে আগুন লেগে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘বলাকা’ নামের ওই আবাসনের তিন নম্বর গেটের কাছে আগুন লাগে। আগুনেই এক বৃদ্ধা পুড়ে যান। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় হাসপাতালে। স্থানীয়রা জানান, যে ফ্ল্যাটে আগুন লেগেছে সেখানেই থাকতেন এই বৃদ্ধা। বাড়িতে আর কেউ ছিলেন না। বৃদ্ধাকে বাইরে থেকে তালাবন্ধ করে তাঁর ছেলে কাজে চলে যান। তারপরই এই ঘটনা ঘটে। একইসঙ্গে স্থানীয়রা এও জানান, এদিন দুপুরে হঠাৎ-ই স্থানীয়দের নজরে আসে একটি ফ্ল্যাট থেকে বের হচ্ছে আগুনের শিখা। সঙ্গে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। এদিকে কানে আসে এক বিস্ফোরণের আওয়াজ। যার জেরে বাড়তে থাকে আগুনের তীব্রতা। আর এই বিস্ফোরণ যে একটি গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে হয়েছে তাও বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও। খবর দেওয়া হয় দমকলে। পাশাপাশি জল দিয়ে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান আবাসনের আবাসিক ও প্রতিবেশীরাও। পাশাপাশি যে ফ্ল্যাটে আগুন লেগেছে সেখানকার বাসিন্দাদের সরানোর চেষ্টা করা হয়। চার তলা আবাসনের বাসিন্দারা এই ঘটনায় এতোটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যে , কেউ ভয়ে ছাদে উঠে যান, কেউ বা নীচে নেমে আসেন।
খবর পেয়েই দমকলের ৩টি ইঞ্জিন পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় আগুন আয়ত্তে আনার কাজ। পরে ঘটনাস্থলে যায় আরও ২টি ইঞ্জিন। এরপর দমকলের তরফ থেকে জানানো হয় যে, আবাসনের সমস্ত বাসিন্দাকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি ফ্লোর খালি করে দেওয়া হয়। তবে কী থেকে এই অগ্নিকাণ্ড তা স্পষ্ট ভাবে জানাতে পারেননি দমকল আধিকারিকেরা। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এসিতে শটসার্কিটের জেরেই এই অগ্নিকাণ্ড। তবে আগুন নেভার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে কারণ নিয়ে। এদিকে দীর্ঘক্ষণ আবাসনের বাসিন্দাদের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ভয়ে কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে পারছিলেন না। অন্যান্য ফ্ল্যাটের সিলিন্ডার গুলোতে যাতে আগুন লেগে বিস্ফোরণ না হয়, সেদিকেও নজর দেয় দমকল।
এদিকে নিউ টাউনের অন্যতম পুরনো একটি আবাসন এই বলাকা আবাসন। একাধিক পরিবার রয়েছে এই আবাসনে। এদিনের এই ঘটনায় আবাসনের সেক্রেটারি ও দমকল কর্মীদের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলাকা আবাসনের বাসিন্দারা। অভিযোগ, আবাসনের কোনওরকম রক্ষণাবেক্ষণ হত না। এদিকে দমকল কর্মীদের যন্ত্রপাতিও সব ঠিক নেই। যার জেরে আগুন নেভানোর কাজে নেমেও প্রবল সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের।
প্রসঙ্গত মঙ্গলবার বিরাটির ১ নম্বর মহাজাতিনগরের ভোর চারটে নাগাদ একটি বাড়িতে আগুন লেগে যায়। বাড়ির তিন সদস্য তখন ঘুমোচ্ছিলেন। ধোঁয়ায় জ্ঞান হবারান বাবা ও ছেলে। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বয়স্ক গৃহকর্ত্রীকেও। হাসপাতালে এলে চিকিতসকরা মৃত বলে জানান বিদ্যুত্ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ৯২ বছর বয়সী বাবাকে।