কলকাতা: সোমবার সাতসকালে ফের বিধ্বংসী আগুন দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়া স্টেশন রোডে। এখানকারই আনন্দনগর স্কুলের পাশের একটি বাড়িতে আগুনের শিখা নজরে আসে স্থানীয়দের। খবর পেতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। পরে সেখানে পৌঁছায় আরও তিনটি ইঞ্জিন। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। এদিকে বাড়িটির প্রবেশ পথ সরু হওয়ায় দমকলের কোনও গাড়ি গলিতে প্রবেশ করত পারেনি। লুপ লাইন তৈরি করে আগুন নেভানোর কাজ চালানো হয়। ফলে আগুনের উপর প্রাথমিক নিয়ন্ত্রণ পাওয়া গেলেও যথেষ্ট বেগ পেতে হয় দমকল কর্মীদের। দমকল আধিকারিকেরা অবশ্য জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও কিছু জায়াগায় পকেট ফায়ার ছিল। তা পরে নেভান দমকলকর্মীরা। এদিনের এই অগ্নিকাণ্ডে কোনও হতাহতে খবর মেলেনি। কী থেকে আগুন লাগল সে ব্যাপারে নিশ্চত নন দমকল আধিকারিকেরা।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ এই আগুন নজরে আসে স্থানীয়দের। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, বাড়ির ছাদের ফাটল দিয়ে ধোঁয়া বের হতেও দেখতে পান স্থানীয়রা। ঘটনায় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কারণ আগুনের তাপে বাড়িটি ভেঙে পড়লে অন্যান্য বাড়ির মানুষের পক্ষে নিজেদের বাড়ি থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে যেত। পাশাপাশি এই ঘটনায় স্থানীয়দের অভিযোগ, সোনারপুর থানার গড়িয়া তেঁতুলবেড়িযা অনুকূল চন্দ্র রোডে, অনুকূল হাইস্কুলের পাশের পাশের বাড়িটি নামে বসতবাড়ি হলেও দীর্ঘদিন ধরেই আসলে লাউডস্পিকার তৈরির কারখানা ও গুদাম। ফলে লাউডস্পিকার তৈরির সমস্ত দাহ্য থেকে অতি দাহ্য পদার্থে ঠাসা তিনতলা বাড়ির পুরোটাই। শিরিশ কাগজ, গদের আঠা, অ্যাডহেসিভের মতো জিনিস প্যাকিং হয়ে এখানে রাখা থাকতো বলে জানা গিয়েছে। এদিকে এই বাড়িতে সেই ভাবে আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থা ছিল না বলেই জানান গুদামের কেয়ারটেকার এবং দমকল আধিকারিক সকলেই। একইসঙ্গে এলাকাবাসীর অভিযোগ, বহুবার বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। এদিনের এই ঘটনার পর পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, কারখানার মালিক এই মুহূর্তে কলকাতার বাইরে। তার পরিচিত এক ব্যক্তি অবশ্য জানান, এটি পঞ্চায়েত এলাকা থাকাকালীনই এখানে কারখানা চলছে। তবে প্রশ্ন একটাই, এই কাজের অনুমতি এল কী করে বা সবার নজর এড়িয়ে কীভাবেই বা চলছিল এই কাজ।