নিজস্ব প্রতিবেদন, আসানসোল: মঙ্গলবার কয়লা কাণ্ডে ফাইনাল চার্জ গঠন হল না। আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে মূল অভিযুক্তদের ২ জন অনুপস্থিত থাকার কারণে চার্জ গঠন হল না। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এদিন গরহাজির ছিলেন জয়দেব মণ্ডল ও নারায়ণ খড়কে। অপরদিকে বিনয় মিশ্র দীর্ঘদিন ফেরার। আরও দুই অভিযুক্ত গুরুপদ মাজি ও সিআইএসএফ কম্যান্ডেন্ট ইডির মামলায় তিহার জেলে রয়েছেন।
কয়লা মামলার প্রথম চার্জশিটের পর আরও দু’টি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে ৪৪ জন অভিযুক্তর নাম রয়েছে। গত ১৪ মে বিচারক নির্দেশ দেওয়ায় মঙ্গলবার সকালেই এই মামলার তদন্ত করা সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার উমেশ কুমার সিং, সিবিআই আইনজীবী রাকেশ কুমার ও অভিযুক্তদের আইনজীবীরা আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এদিন একাধিক অভিযুক্তদের আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেন, এই মামলার কপি সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে তাঁরা পাননি।
বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আগামী ৩ জুলাই চার্জ গঠন করার পরবর্তী দিন ঘোষণা করেন। কয়লা কাণ্ডের তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী এদিন বেশ কড়া মনোভাব দেখান। বিচারক বলেন, ‘মাত্র দু’জনের জন্য বাকিরা ভোগান্তির শিকার হবেন, চার্জগঠন করা যাবে না, তা মেনে নেওয়া যাবে না। সিবিআই তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে দিতে পারলে, ওই দু’জনকে এখনই অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে আনার ব্যবস্থা করতাম।’
এরপরেই সিবিআই কয়লা কাণ্ডের তদন্তকারী অফিসার উমেশ কুমারের কাছে জানতে চান, ‘তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে কিনা। জিজ্ঞাসা করেন আরও কি চার্জশিট জমা দেবেন?’ আইও উমেশ কুমার বলেন, ‘আরও একটা চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। তবে সেটাই শেষ নয়। পরে আরও চার্জশিট জমা হতে পারে।’ উমেশ কুমারের মুখে এই কথা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করে সিবিআই বিচারক বলেন, ‘২৫ দিন সময় দিচ্ছি। ফাইনাল চার্জশিট জমা করুন। কয়লা কাণ্ডের তদন্ত শেষ করুন। দেখা যাচ্ছে সাড়ে তিন বছর হয়ে গেল তদন্ত শেষ করতে পারেননি।’
উল্লেখ্য, কয়লা চুরি ও পাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত তথা কিংপিন অনুপ মাজি ওরফে লালাকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও, গৃহবন্দি করতে পেরেছে আসানসোল সিবিআই আদালত। লালাকে সামনে রেখেই কয়লা কাণ্ডে তদন্তের চার্জশিট গঠন হতে চলেছে এবার। গত ১৪ মে কয়লা পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। ১০ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়। ওইদিনই বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন লালা। নিম্ন আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, কয়লা পাচার মামলায় চূড়ান্ত চার্জ গঠনের পরেই মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া বা ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা।
লালাকে পৈতৃক বাড়িতে থাকারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর মহকুমার নিতুড়িয়া থানা এলাকার অন্তর্গত ভামোরিয়া গ্রামে লালার পৈতৃক বাড়ি। এখন তাঁকে ওই ঠিকানাতেই থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আদালতের অনুমতি ছাড়া এলাকা ছাড়তে পারবেন না লালা।