নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত? বলাই যায়। সেই সঙ্গে জোরালো হয়ে উঠছে স্বার্থের সংঘাত প্রশ্ন। ক্লাব কোচ যদি জাতীয় দলের দায়িত্ব পান, তাঁর টিমের প্লেয়ার বেশি গুরুত্ব পাবেন জাতীয় দলে। কিংবা ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থাকলে হয়তো জাতীয় দলে নাও খেলানো হতে পারে। চোট লেগে যেতে পারে এই অজুহাতে। প্রশ্ন যতই থাকুক না কেন, সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত যে নিয়ে ফেলল, তাতে আর সন্দেহ কী! যা কখনও হয়নি, এ বার তাই দেখা যাবে ভারতীয় ফুটবলে। ক্লাব ও জাতীয় দলের কোচিং একসঙ্গে করাবেন মানোলো মার্কোয়েস। ইগর স্টিমাচের পরিবর্তে এফসি গোয়ার কোচকেই দেওয়া হল দায়িত্ব। মানোলোর সঙ্গে আরও এক বছরের চুক্তি রয়েছে গোয়ার। অর্থাৎ, আগামী বছর আইএসএলে কোচ হিসেবে দেখা যাবে মানোলোকে। জাতীয় দলও সামলাবেন। তিনি বছরের চুক্তিতে পরের দুটো বছর শুধু জাতীয় টিমেরই কোচিং করাবেন স্প্যানিশ কোচ।
ক্লাব ও জাতীয় দলে কোচিং করানোর ঘটনা আন্তর্জাতিক ফুটবলে নতুন নয়। স্যার আলেক্স ফার্গুসন, গাস হিডিঙ্ক থেকে রেনাস মিশেল; অনেকেই দ্বৈত ভূমিকা পালন করেছেন । সাফল্যও পেয়েছেন। ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবে কিন্তু বলে দিচ্ছেন, ‘ভারতীয় ফুটবলে এটা বেনজির সিদ্ধান্ত নয়। আন্তর্জাতিক ফুটবলের দিকে তাকালে এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে। অ্যালেক্স ফার্গুসন, গাস হিডিঙ্ক, রেনাস মিশেল, রিকি হার্বার্টরা এমনটা করেছেন। ভারতে এমনটা নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারল, যেটা সময়োপযোগী। মার্কোয়েস চার বছর ধরে ভারতে কোচিং করাচ্ছেন। হায়দরাবাদ থেকে এফসি গোয়াতে সাফল্যের সঙ্গে কোচিং করিয়েছেন।’
স্প্যানিশ কোচ মার্কোয়েসকে ভারতীয় টিমের নতুন কোচ করার পিছনে একটা যুক্তি কাজ করেছে। কল্যাণের কথায়, ‘এর আগে আমরা দেখেছি, জাতীয় টিমের জন্য বিদেশি কোচ বাছা হল তাঁর দেশের ভূগোল, পরিবেশ, ফুটবলারদের মানসিকতা বুঝতে ছ’মাস সময় লেগে যায়। তারপর তিনি দল বাছেন। কোচিং করতে করতে আরও দেড় বছর লেগে যায়। পরের ছ’মাস তিনি চুক্তি নিয়ে ভাবেন। এই সমস্যা থেকেই আমরা এমন একজনকে চেয়েছিলাম, যিনি ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে যথেষ্ট জানেন। আইএসএল, আই লিগ থেকে সন্তোষ ট্রফি, সমস্ত খেলা দেখেন। মার্কোয়েসের দল বাছতে বেশি সময় লাগবে না। জাতীয় দল শক্তিশালী হবে।’
স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন যে থেকে যাচ্ছে? প্রশ্নের উত্তরে কল্যাণ বলে দিলেন, ‘আমার মনে হয় না এখানে স্বার্থের সংঘাতের মতো কিছু ঘটতে পারে। ফিফার সব গাইডলাইন মাথায় রেখেই তাঁকে কোচ করা হয়েছে।’ এ দিকে, ফেডারেশনের টেকনিক্যাল কমিটি থেকে বাইচুং ভুটিয়া পদত্যাগ করেছেন, এমন খবর রয়েছে বাজারে। কল্যাণ বলছেন, তাঁর কাছে এমন কোনও খবর নেই। কোনও চিঠিও পাননি।