কলকাতা: মাধ্যমিক , উচ্চ মাধ্যমিকের মতো বোর্ডের পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান পেতে ঠিক কত ঘণ্টা পড়তে হয়? এই প্রশ্ন সকলেরই থাকে।
অভিভাবকরাও সন্তানদের বলে থাকেন, পরীক্ষায় ভালো ফল করতে হলে শেষের ২-৩ মাস তো সব ভুলে অন্তত ৭-১০ ঘণ্টা না পড়লে আশানুরূপ ফল হবে না। তবে চির পরিচিত ছক ভেঙে সারাদিনে মাত্র ৪ ঘণ্টা পড়েই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের শুভ্রাংশু সর্দার। তবে হ্যাঁ, গান, পড়াশোনা নিয়ে থাকা এ ছাত্র কিন্তু মোবাইল বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত নন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর কার্যত কোনও বিচরণ নেই। আর বইয়ের পড়ার বাইরে তাঁর অনেকটা সময় কাটত স্কুলের লাইব্রেরিতে।
৫০০ এর মধ্যে ৪৯৬ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের এই ছাত্র। মিশনের ছাত্রদের নিয়ে যে ব্যান্ড রয়েছে, সেই ‘জোনাকি’ -র একসময় লিড সিঙ্গার ছিলেন শুভ্রাংশু। ভালো ফলের খুশিতে সকলের আবেদনে দু’কলি গান গেয়ে শোনান তিনি , ‘বন্ধু তোমায় কী গান শোনাবো এই বিকেলবেলায়।’ আগামীদিনে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশুনা করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। শুভ্রাংশু জানান, স্কুলের শিক্ষকরা তাঁকে খুব সাহায্য করেছে ।এছাড়া তাকে সবথেকে বেশি সাহায্য করেছে স্কুলের লাইব্রেরি। যেখানে সময় কাটাতে ও পড়তে পছ¨ করতেন।
বললেন, বন্ধুদের সঙ্গে পড়াশোনা নিয়ে প্রতিযোগিতা ছিল, তবে তা সুস্থ প্রতিযোগিতা। শুভ্রাংশুর বক্তব্য ভালো রেজাল্টের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন। তবে একেবারে প্রথম হবেন সেটা জানা ছিল না। ভালো রেজাল্ট বা পড়াশোনা করার জন্য একটা প্যাশন থাকতে হবে মত শুভ্রাংশুর। শুভ্রাংশুর বাবা তাপস সরদার পিক আপ ভ্যান চালান ।বাড়িতে অর্থাভাব রয়েছে। মোবাইলেই তারা জানতে পারেন ছেলের প্রথম হওয়ার খবর। তাঁরও বক্তব্য জেদ থাকতে হবে তবে জীবনে সাফল্য আসবে। ছেলে উপহার হিসেবে বই সবসময় পছন্দ করত। এমনকী পুজোর সময় নতুন জামা কাপড়ের বদলে বই নিতেন শুভ্রাংশু। মা বাড়িতেই টুকটাক সেলাইয়ের কাজ করতেন। তিনি জানান ছেলে একটু ফুডি, খেতে ভালোবাসে। বিরিয়ানি, চাইনিজ খাবার শুভ্রাংশুর পছন্দ বলে জানালেন তার মা শম্পা সরদার।