খোদ বিচারকের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। হাইকোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে বিচারকের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সিবিআইয়ের তরফ থেকে জানতে চাওয়া হয়, নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষকে নিজের চেম্বারে ডেকে কেন কথা বললেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায় তা নিয়েই। একইসঙ্গে আদালতে এ প্রশ্নও রাখা হয়, কেন সেই বয়ানের ভিত্তিতে নির্দেশ দেওয়া হল কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সিবিআইয়ের তরফ থেকে নতুন আবেদন জানানো হল হাইকোর্টে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় গত এক বছরে পরপর অনেকগুলো নাম জড়িয়েছে। সামনে এসেছে নিত্য-নতুন অভিযোগ। একগুচ্ছ মামলা চলছে হাইকোর্ট ও বিশেষ আদালতগুলিতে। এর মধ্যে কুন্তল ঘোষের দেওয়া একটি চিঠি কার্যত মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতি মামলার। সেই চিঠিতে দাবি করা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা তাঁকে নানাভাবে হেনস্থা করছে তাঁকে। সেই মামলায় আর তদন্তের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছিল হাইকোর্ট। এরপরও বিশেষ আদালত পুলিশকে কেন তদন্তের নির্দেশ দিল, সেই প্রশ্নই তুলেছে সিবিআই।
আর এই প্রসঙ্গেই বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, বিশেষ আদালতের বিচারক কুন্তল ঘোষকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কোথায় তিনি তাঁর অভিযোগের কথা বলতে চান, আইনজীবীদের চেম্বারে নাকি। কুন্তলের ইচ্ছা অনুযায়ী, তাঁকে বিচারক তাঁর চেম্বারে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ। আর এরই সূত্র ধরে সিবিআই-এর প্রশ্ন, ‘এভাবে জেলে থাকা একজন অভিযুক্তকে কীভাবে ডাকা যায়? যেখানে ক্যামেরা নেই?’ কেন্দ্রীয় সংস্থার অভিযোগ, সিট-এর মাথায় থাকা ওই অফিসারের নাম জোর করে বলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বিচারক।
এরপরই বিচারক কুন্তলের অভিযোগের বিষয়ে সিবিআই-এর জয়েন্ট ডিরেক্টর ও কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনারকে নির্দেশ দেন তদন্ত করার। এই প্রসঙ্গেই সিবিআই এদিন সওয়াল করতে গিয়ে বলে, ‘সংবিধানের বাইরে গিয়ে কাজ করছেন এই বিচারক। কোথা থেকে এই অধিকার পাচ্ছেন তিনি? মনে হচ্ছে এটা কোনও সুপার কোর্ট।’ এক্ষেত্রে বিচারব্যবস্থার অকৃতকার্যতা এবং হাইকোর্টকে অসম্মান করাই বোঝায় বলে দাবি সিবিআই-এর। বিশেষ আদালতের নির্দেশ আপাতত কার্যকর না করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।