অতি চালাকি করছেন কুন্তল, এমনটাই জানালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কারণ, দলীয় নেতাদের নাম বলার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, এমনটাই দাবি করেছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত তথা বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। শুধু তাই নয়, ইডি-র বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনে তিনি হেস্টিংস থানায় এক অভিযোগ পত্রও পাঠান। আর এরই প্রেক্ষিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বুধবার বলেন, ‘এটা একটা মারাত্মক প্রবণতা। তদন্তকারী আধিকারিকদের হুমকি দেওয়া এবং তদন্তের গতি স্তব্ধ করার জন্য এই সব করা হচ্ছে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে এসব বন্ধ করতে হবে।’ পাশাপাশি এও জানান, ‘এই অতিচালাকি বরদাস্ত করা যাবে না।’
এদিকে বুধবারের শুনানিতে অন্তর্বর্তী নির্দেশে আদালত জানায়, কুন্তল ঘোষের অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত ও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না। তাঁর এই মন্তব্যে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে এই অভিযোগ করছিলেন তৃণমূল নেতারা। প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল কুন্তল ঘোষকে। এরপরেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রী হৈমন্তীর বিরুদ্ধে। যদিও হৈমন্তী সংবাদ মাধ্যমে দাবি করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার কোনও যোগাযোগ নেই। হৈমন্তীকে ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছিলেন তাঁর স্বামী গোপাল দলপতিও।
তবে কুন্তলের এই বক্তব্য সর্বসমক্ষে আসার পরই কুন্তল ঘোষের সেই অভিযোগ পত্র দেখতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ইডি-র আধিকারিকেরা। আদালতে ইডির তরফ থেকে আইনজীবী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান তদন্তকারীদের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ করেছেন কুন্তল। একইসঙ্গে ইডি-র আইনজীবী আদালতে জানান, প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সুপারের মাধ্যমে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা। এরপরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিম্ন আদালতে জমা দেওয়া কুন্তল ঘোষের অভিযোগপত্র বুধবারের মধ্যে আদালতে পেশ করার জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা বিচারককে নির্দেশ দেন। এরই পাশাপাশি হেস্টিংস থানার অভিযোগ পত্রও আদালতে পেশ করার জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।