২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাসের পিছনে ছিল অভিষেক, বিস্ফোরক মন্তব্য সোনালির

ফের বোমা ফাটালেন সোনালি গুহ। যখন পঞ্চায়েতে নির্বাচনে মানুষের মতামত নিয়ে প্রার্থী ঠিক করতে জেলায় জেলায় ঘুরছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক তখনই। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড এদিকে বার্তাও দিচ্ছেন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচনের। তারই প্রেক্ষিতে ২০১৮-র পঞ্চায়েতে সন্ত্রাস ও ভোট লুঠের জন্য এই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই আঙুল তুললেন সোনালি। বলেন, ‘২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিরোধীদের কোথাও মনোনয়ন জমা দিতে দেননি অভিষেক। আমাকে তিনি বলেছিলেন, সোনালি পিসি আমি পঞ্চায়েত ভোটের দিন কোনও গণ্ডগোল করব না। কিন্তু, বিরোধীরা যাতে মনোনয়ন দিতে না পারে তার বন্দোবস্ত করব।’ অভিষেককে তখন তিনি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তৃণমূল সাংসদ তাঁর কোনও কথা শোনেননি বলেও দাবি করেন সোনালি। মমতার প্রাক্তন ছায়াসঙ্গীর কথায়, ‘বিরোধীরা যাতে নমিনেশন দিতে না পারে, সেই কারণে জেলাশাসকের অফিসে তৃণমূলকর্মীদের বসিয়ে রাখা হয়েছিল। এটা অভিষেকের নির্দেশেই হয়েছিল। একদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আরেকদিকে অনুব্রত মণ্ডল। দু’জনেই এক কাজ করেছেন। অনুব্রত এখন তিহাড়ে, অভিষেককেও সেখানে যেতে হবে।’
এরই পাশাপাশি সোনালির অভিযোগ, ‘২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের সময় ভোটের কাজের জন্য আমি গাড়ি চেয়েছিলাম, কিন্তু আমাকে তা দেওয়া হয়নি। সঙ্গে এও জানান, কোভিড আবহে অভিষেক যে ‘কল্পতরু রান্নাঘর’ থেকে মানুষকে খাবার দিয়েছেন, তার ব্যবস্থাও উনি নিজে করেননি। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখের স্বামী রমজান শেখ গোটা খরচটা জুগিয়েছেন। এদিকে নাম হয়েছে অভিষেকের। যদিও এখন কেউ এটা স্বীকার করবেন না। ইদের সময় সংখ্যালঘু এলাকাতেও অভিষেক যেতেন না। কিন্তু এখন রেড রোডে ইদের অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে তাঁকে দেখা যায়। এই নিয়ে যত কম বলা যায়, তত ভালো’
প্রসঙ্গত, এই সোনালি গুহ বাংলার রাজনীতিতে পরিচিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের ‘ছায়াসঙ্গী’ হিসেবে। সেখান থেকে বিধায়ক, পরবর্তীতে ডেপুটি স্পিকার। শুরুটা সেই বাম আমল থেকে। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতার আশেপাশে সর্বদাই থাকতে দেখা যেত তাঁকে। তবে তিনি এখন প্রাক্তন। কারণ ২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। অভিমানে বিজেপিতে যোগ দিলেও ফল বেরনোর পর ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ‘নতুন তৃণমূল’-এ স্থান হয়নি একদা মমতা ঘনিষ্ঠ এই নেত্রীর। মনস্থির করেন, অদৃষ্টের লিখন মেনে তিনি বিজেপিই করবেন। এরপরই একের পর এক ইস্যুতে মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানাতে দেখা যাচ্ছে সাতগাছিয়ার এই প্রাক্তন বিধায়ককে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 4 =