মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন আট কর্তাকে মুক্তি দিয়েছে কাতার। সোমবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে দেওয়া বিবৃতিতে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে দেশে ফিরেছেন সাত প্রাক্তন নৌসেনা কর্তা। অষ্টম জনও দ্রুত ঘরে ফিরবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপেই কাতার সরকার সিদ্ধান্ত বদল করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কাতারে আটক থাকা নৌসেনাকর্তারা এর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেই এর কৃতিত্ব দিচ্ছেন। ভিন দেশে মৃত্যুদণ্ড, সেখান থেকে মুক্তি, এমনকী সুস্থ শরীরে দেশে প্রত্যাবর্তনের এই ঘটনা যে নয়াদিল্লির বিরাট কূটনৈতিক জয়, তা বলা বাহুল্য।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কূটনীতিতে শুধুমাত্র মৃত্য়ুদণ্ডের সাজাই এড়ালেন না, সুস্থ শরীরে দেশেও ফিরে আসতে পারলেন ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন কর্তারা। দেশের মাটিতে পা রেখেই তাঁরা বললেন ‘ভারত মাতা কি জয়’। একইসঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ধন্যবাদ জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ভারত সরকারকে।
এ দিন সকালেই বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বন্দি ভারতীয়দের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাতার। নৌসেনার আটজন প্রাক্তন কর্তার মধ্যে ইতিমধ্যেই দেশে ফিরে এসেছেন সাতজন।
কাতার থেকে ভারতে ফিরে এক প্রাক্তন নৌসেনা কর্তা বলেন, ‘সুরক্ষিতভাবে দেশে ফিরতে পেরে আমরা খুব খুশি। আমরা অবশ্য়ই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। উনি ব্যক্তিগতভাবে হস্তক্ষেপ করেছিলেন বলেই আমরা আজ দেশে ফিরতে পেরেছি।’
এক প্রাক্তন নৌসেনা কর্তা আবেগঘন গলায় বলেন, ‘ভারতে ফেরার জন্য আমরা প্রায় ১৮ মাস অপেক্ষা করেছিলাম। আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে কৃতজ্ঞ। ওনার হস্তক্ষেপ ও কাতারের সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকলে, এটা সম্ভব হত না। অন্তর থেকে আমরা ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, নৌসেনা থেকে অবসরের পর কাতারে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতে গিয়েই ফেঁসে গিয়েছিলেন এই আটজন। তাঁদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে কাতার আদালতের তরফে ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল, ক্যাপ্টেন সৌরভ বশিষ্ট, কম্যান্ডার পুরনেন্দু তিওয়ারি, ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র কুমার ভর্মা, কম্যান্ডার সুগুনাকর পাকালা, কম্যান্ডার সঞ্জীব গুপ্তা, কম্যান্ডার অমিত নাগপাল ও সেলর রাগেশকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়।
এই সাজা ঘোষণার পরই উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত সরকার। এরপরে ডিসেম্বর মাসেই ভারত সরকারের কূটনৈতিক পদক্ষেপের পর কাতারের তরফে ওই আট ভারতীয়ের মৃত্যুদণ্ডের সাজা বাতিল করে দেওয়া হয়।