নিজস্ব প্রতিবেদন, কালনা: প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে অরণ্যে ভরা পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার ধাত্রীগ্রামে ডাকাতরা মা কালীকে পুজো দিত এবং মোষ বলি করে ডাকাতি করতে যেত ডাকাত দল।
সে সব এখন অতীত, যুগের তালে তালে এখন বেড়েছে জনবসতি। তাই এখন বাড়ির পুজোর আকার নিল ডাকাত কালী, তবে এখন ডাকাত কালী নয়, কালনার ধাত্রীগ্রামের চ্যাটার্জি বাড়ির বুড়ো মা বলেই গ্রামে পরিচিত। জানা গিয়েছে, ঠিক কত বছর আগে তা কারও জানা নেই, তবে এখানকার কালী জাগ্রত হওয়ায় তাঁকে কোমরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে এই পরিবার। পুজোয় মাকে পাঁচ রকমের মাছ, পাঁচ রকমের সব্জি, ভাজা ও ভাতের ভোগ দেওয়া হয়। একসময়ে মোষ বলি হত তার পরিবর্তে এখন পাঠা বলি দেওয়া হয়। এই পুজোকে ঘিরে আনন্দে মেতে ওঠেন গ্রামের ও আশপাশের গ্রামের মানুষরা।
কথিত আছে, প্রায় তিনশো বছর আগে ডাকাত সর্দাররা মা কালী দেবীপ্রতিমার পুজো করে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বেরতেন, সময়ের ও যুগের তালে তালে এই গ্রামের গভীর অরণ্য কেটে গড়ে ওঠে বসত বাড়ি ও গ্রাম, পূর্ববর্তী সময়ে ধাত্রীগ্রামের এই ব্রাহ্মণ পাড়া এলাকায় গভীর জঙ্গলের মধ্যে পরিবারেরই পূর্বপুরুষ ত্রিলোচন চট্টোপাধ্যায় এই দেবী প্রতিমাকে পাওয়ার পর আরাধনা শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে একইভাবে চ্যাটার্জি পরিবারের সদস্যরা এই দেবী প্রতিমার আরাধনা করে থাকেন। দেবীর নিজস্ব পুকুর রয়েছে আর সেখান থেকে মাছ ধরে দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। পূর্বে মোষ বলির প্রচলন থাকলেও এখন তা বন্ধ হয়েছে। এতটাই চঞ্চলা যে বলির সময় দেবী দোদুল্যমান হয়ে পড়েন, তাই যাতে কোনও ক্ষতি না হয় তার জন্য কোমরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় আজও।