মালদা: হঠাৎ করে মানিকচক ব্লকের ব্রজলালটোলা এলাকায় গঙ্গা নদীর ভাঙন শুরু হওয়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পাশাপাশি ভাঙনের জেরে বাড়িঘর সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার তৎপরতা শুরু হয়েছে স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কেন্দ্র সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার মাশুল গুনতে হচ্ছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষদের। কয়েক বছর আগে মাঝপথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভাঙন প্রতিরোধের কাজ বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে অল্প অল্প করে ব্রজলালটোলা এলাকায় চলছে ভাঙন। সম্প্রতি রাজ্য সরকার মানিকচকে গঙ্গার ভাঙন ঠেকাতে সেচ দপ্তর এবং প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে সেচ দপ্তর কাজ করলেও সেই ভাঙন ঠেকানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই মানিকচক ব্লকের অন্তর্গত ভুতনি থানার দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম নারায়ণপুর এবং ব্রজ লালটোলায় প্রায় ১০০ মিটার গঙ্গার পার জুড়ে ভাঙন শুরু হয়। যদিও ওইসব এলাকায় পাথরের বোল্ডার ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের উদ্যোগ নিয়েছিল সেচ দপ্তর। কিন্তু বর্ষার মরশুমে গঙ্গা এখন ফুলে ফেঁপে উঠেছে। তার জেরেই হঠাৎ করেই শুরু হয়েছে ভাঙন। পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই নিজেদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার তৎপরতা শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। সকাল থেকেই বাড়ির ইট খুলে এবং জিনিসপত্র লরিতে চাপিয়ে অন্যত্র সরে যাওয়ার কাজে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে।
ব্রজলালটোলা এলাকার বাসিন্দা বাসুদেব মণ্ডল, মইনুদ্দিন শেখ, সাইদুল শেখদের বক্তব্য, কয়েক বছর আগে ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ভুতনি এলাকায় গঙ্গার ভাঙন প্রতিরোধের দায়িত্ব নিয়েছিল। আচমকাই মাঝপথে ওরা কাজ বন্ধ করে দেয়।
রাজ্যের সেচ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মালদার মোথাবাড়ি কেন্দ্রের বিধায়িকা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, মানিকচকের এলাকার ভাঙন পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণভাবে ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ দায়ী। তাদের উদাসীনতার জন্য মানুষকে এখন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী পরবর্তীতে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেভাবে হোক গঙ্গার ভাঙন ঠেকাতে হবে। তারপর থেকে সেচ দপ্তর জরুরিভাবে কাজ শুরু করেছে ।
তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন, এলাকায় গঙ্গার ভাঙন একটা বড় সমস্যা। তবে সেচ দপ্তর উদ্যোগ নিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করছে। যেটা আগে ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষকে করা দরকার ছিল। এদিনের ভাঙনের খবর পেয়েছি। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
যদিও এ প্রসঙ্গে ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের এক কর্তা জানিয়েছেন, বিগত তিন বছর আগে ওই এলাকার ভাঙ্গন প্রতিরোধের দায়িত্ব থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরে গিয়েছে। এখন সেচ দপ্তরের অধীনে রয়েছে। কাজেই এব্যাপারে কিছু বলা যাবে না। তবে যেটা অভিযোগ উঠছে তা সঠিক নয়।