এখনও পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট অনুসারে ৮ জুলাই হবে ভোট। অর্থাৎ তখন ভরা বর্ষা বাংলা জুড়ে। এই অবস্থা. প্রত্যন্ত এলাকায় ভোটের ডিউটিতে মশার কামড়ের আতঙ্কের সঙ্গে রয়েছে সাপের উপদ্রব। পাশাপাশি রয়েছে অতিবৃষ্টির সমস্যাও। এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, এ সব সমস্যা সামলাতে সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন আধিকারিকদের দায়িত্ব দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এখানে বলতেই হয়, এর আগে পঞ্চায়েত ভোটে আলিপুরদুয়ারে ম্যালেরিয়ার উপদ্রবের মোকাবিলায় ভোটকর্মীদের একবার মশারিও দিয়েছিল কমিশন। তবে কমিশন জেলাশাসকদের স্পষ্ট জানিয়েছে, ভোটকর্মীদের প্রয়োজনের ভিত্তিতে স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভাবতে গিয়ে এ সব বিষয়ে লাগাম ছাড়া খরচ করা চলবে না। জেলার জন্যে কমিশনের নির্ধারিত বাজেটের মধ্যেই খরচ করতে হবে। এদিকে কমিশন সূত্রে এও জানা গেছে, ভোটকর্মীদের ডিউটিতে যে ব্যাগ দেওয়া হয়, তাতে ৭৬ ধরনের জিনিস থাকে। এর মধ্যে ব্যালট বক্স, ব্যালট পেপার, ভোটের কালি, রাবার স্ট্যাম্প, স্ট্যাম্প প্যাড এবং ভোটার তালিকা, ভোটার স্লিপ, ব্যালট বক্স সিল করার জন্যে গালা, প্রিসাইডিং অফিসারের ডায়েরি-সহ ভোটের কাজে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সরঞ্জাম কেন্দ্রীয় ভাবে কমিশনই পাঠায়। এরই পাশাপাশি জেলা-ভিত্তিক কিছু জিনিস, যেমন বিশেষ করে ফাস্ট-এড বক্স স্থানীয় ভাবে জেলা প্রশাসন যুক্ত করে। তবে সাগর থেকে পাহাড়, সব জায়গায় ভোটকর্মীদের একই রকম জিনিসের প্রয়োজন হয় না। এলাকা-ভিত্তিক, বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকায় ভোটকর্মীদের জন্যে বাড়তি কিছু ব্যবস্থা করতে হয়। যা জেলা প্রশাসনই করে। বিশেষ করে পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকায় ভোটকর্মীদের খাবারের জন্যে কমিশনের দেওয়া টাকা কাজে আসে না। কারণ, টাকা থাকলেও সেখানে কিনে খাওয়ার সুযোগ কম। তাই স্থানীয় প্রশাসন সেখানে ভোটকর্মীদের খাবারের ব্যবস্থা করে। আবার অতি গরমে ভোট করার সময়ে দেখা যায় বুথে পাখা নেই। সেখানেও জেলা প্রশাসন থেকে ভোটকর্মীদের জন্যে পাখার ব্যবস্থা করা হয়। প্রয়োজন হলে মশা মারার ধূপ, মশারি, মোমবাতিও সরবরাহ করা হয়। এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, জেলায় বুথের সংখ্যার উপরে ভিত্তি করেই বাজেট বরাদ্দ স্থির করা হয়। এবার সবচেয়ে বেশি বুথ রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। ৬ হাজার ২২৬টি বুথ। তাই ওই জেলায় বাজেট বরাদ্দও বেশি। আবার সবচেয়ে কম বুথ কালিম্পংয়ে। ২৬৩টি বুথ। সেখানে বরাদ্দ অনেকটাই কম।
তবে এবার পরিস্থিতি আরও একটু ভিন্ন। ভরা বর্ষায় পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কারণে জল্পনা শুরু হয়েছে, ভোটকর্মীরা এবার বর্ষাতি অর্থাৎ রেন কোট পাবেন কি না তা নিয়ে। এই প্রশ্নে কমিশনের কর্তারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন এ সব কিনলে আপত্তি নেই। কিন্তু কমিশন অতিরিক্ত টাকা দেবে না। তবে ব্যালট বক্স ও ব্যালট পেপার সুরক্ষায় প্লাস্টিকের বিশেষ প্যাকেটের ব্যবস্থা করেছে কমিশন। প্রতিটি ব্যালট বক্সই ভোটের পরে প্লাস্টিকের নির্দিষ্ট প্যাকেটে মুড়ে ফেলতে হবে। তার পর নিয়মমাফিক প্যাকিং করতে হবে। যাতে বৃষ্টি হলে কোনও ভাবেই তা ভিজে না যায়।