ইডি তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। জোর করে তাঁকে দিয়ে বয়ান লিখিয়ে নিয়েছে। এমনই অভিযোগ তুলে এবার আদালতের দ্বারস্থ স¨েশখালির এক সময়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তাঁর মক্কেল যে বয়ান দিয়েছেন, তা তুলে নিতে চাইছেন বলে শাহজাহানের আইনজীবী জাকির হুসেন শনিবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে জানিয়েছেন। শেখ শাহজাহানের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেলের পরিবারের সদস্যদের ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে । যদিও এই চিঠিকে গুরুত্ব দিতে একেবারেই রাজি নয় ইডি। আগামী ১৫ এপ্রিল বিষয়টি ইডির বিশেষ আদালতে উঠবে।
শনিবার আদালতে শুনানি ছিল শেখ শাহজাহানের সন্দেশখালি মামলার। এজলাসে এদিন শাহজাহানের আইনজীবী জাকির হোসেন একটি চিঠি তুলে ধরেন দাবি করেন, সেটি অভিযুক্ত শাহজাহান লিখেছেন। আদালতকক্ষে সেই চিঠি পড়া হয়। তাতে লেখা ছিল, ‘ইডি হেপাজতে ১ এপ্রিল থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত আমাকে চাপ দিয়ে মিথ্যে বয়ান রেকর্ড করানো হয়েছে। বয়ান না দিলে আমি, আমার সহোদর এবং আত্মীয়দের মাদক মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়।’ ওই চিঠিতেই বয়ান প্রত্যাহারের আর্জি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত বলাগড়ের যুবনেতা কুন্তল ঘোষ এবং রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত শঙ্কর আঢ্যও একই অভিযোগ তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে। এদিন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে শুনানি চলাকালীন শাহজাহানের বিচার বিভাগীয় হেপাজত চেয়ে আবেদন জানান ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী। তাঁর দাবি ছিল, এই মামলায় কারা সাক্ষী দিয়েছেন, তা শাহজাহান জানেন। তাই এখন যদি শাহজাহানকে মুক্তি দেওয়া হয়, তা হলে মামলায় অসুবিধা হতে পারে। শাহজাহানের আয়-বহির্ভূত অনেক সম্পত্তি রয়েছে বলেও আদালতে জানান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। সেই সময়েই আদালতে একটি হাতে লেখা কাগজ তুলে ধরেন শাহজাহানের আইনজীবী জাকির। এর পরেই শাহজাহান বয়ান দেন। তবে এখন শাহজাহান ইডিকে দেওয়া তাঁর বয়ান প্রত্যাহার করতে চান বলেও আদালতে আবেদন (রিট্র্যাক্টশন পিটিশন) জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী জাকির।
যদিও শাহজাহানের আইনজীবীর ওই আবেদনের বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবী অরিজিৎ। তাতে শাহজাহানের লেখা রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। এই কাগজ চিঠি না আবেদন, তা নিয়েও সওয়াল করেন ইডির আইনজীবী। আবেদনের পদ্ধতি এবং বক্তব্যেরও বিরোধিতা করেন। এর পর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসারের আধিকারিককে শাহজাহানের কাছে গিয়ে কথা বলতেও দেখা যায়। যার পরে মাথা নাড়তে দেখা যায় শাহাজাহানকে। পরে শাহজাহান ওই কাগজে সই করে দেন।