এবার পুরসভায় নিয়োগ জালিয়াতির তদন্ত করতে তৎপর ইডি। নিয়োগ দুর্নীতিতে মিডলম্যান অয়ন শীলের থেকে পুরসভার নিয়োগের প্রচুর নথি উদ্ধারের বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দিল্লির সদর দপ্তরেও পাঠানো হয়েছে কলকাতা ইডি-র তরফ থেকে। এই সূত্র ধরেই তদন্ত করতে চাওয়া হয়েছে বলে সূত্রে খবর। একইসঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, সিবিআই মামলা শুরু করলেই ইসিআইআর অর্থাৎ এনফোর্সমেন্ট কেস ইনফরমেশন রিপোর্ট করে তদন্তে নামবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। পুরসভার নিয়োগের নথি উদ্ধারের বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টেও রিপোর্ট দেবে ইডি।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত অয়ন শীলের সংস্থার সঙ্গে রাজ্যের একাধিক পুরসভার প্রত্যক্ষভাবে যোগসাজশ ছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের আগে কলকাতা পুরসভা ছাড়া রাজ্যের কোন পুরনিগম বা মিউনিসিপ্যালিটি মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের অন্তর্গত ছিল না। সেই সময় কলকাতা ছাড়া বাকি পুরসভা গুলিতে কর্মী নিয়োগের দায়িত্ব নিজ নিজ পুরসভার চেয়ারম্যান বা সেই প্রতিষ্ঠান গঠিত কমিটি স্থির করত।
বর্তমানে কলকাতা পুরসভার অনুমোদিত স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ৪৬ হাজার ৪২১ জন। কিন্তু বর্তমানে রয়েছেন মাত্র ১৬ হাজার ৬৭৩ জন। অর্থাৎ শূন্য পদ ২৯ হাজার ৭৪৮ জনের। বর্তমানে কলকাতা পুরসভায় অস্থায়ী কর্মী সংখ্যা ১৯ হাজার ৭৮০ জন। রাজ্যজুড়ে পুরনিগম রয়েছে ৬টি এবং মিউনিসিপ্যালিটি রয়েছে ১২৩টি। সবকটি পুরনিগম এবং মিউনিসিপ্যালিটি মিলিয়ে অনুমোদিত কর্মী সংখ্যা রয়েছে ৭৯ হাজার ৩৯৭ জন। এদিকে বাস্তবে এই কর্মী সংখ্যা ৩৯ হাজার ৯৩ জন। রাজ্যজুড়ে সেই জায়গায় অস্থায়ীকর্মীর সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ১০ হাজারের কাছাকাছি। ইডি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, উত্তর ২৪ পরগনার ৬ পুরসভার প্রতি স্তরে নিয়োগে হাজার হাজার চাকরি বিক্রি হয়েছে। পুরসভার গাড়িচালক থেকে টাইপিস্ট সব পদে লক্ষ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ইডির তরফ থেকে। এই দাবি তোলা হয়েছে আদালতেও।
পাশাপাশি অয়নকে আদালতে পেশ করে ইডি এও দাবি করে ‘এই প্রোমোটারের অফিস থেকে পুরসভা নিয়োগেও দুর্নীতির হদিশ মিলেছে।’ ইডি-র দাবি, দমদম, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম, বরানগর, হালিশহর, কামারহাটি পুরসভার নিয়োগেও অনিয়ম হয়েছে। ইডি-র দাবি অনুযায়ী, টাইপিস্ট, শ্রমিক, সাফাইকর্মী, গাড়িচালক-সহ একাধিক পোস্টে নিয়োগের ক্ষেত্রে পাঁচ হাজারেরও বেশি পদে বেআইনি নিয়োগ হয়েছে। প্রায় পঞ্চাশ লাখেরও বেশি টাকায় বিক্রি হয়েছে চাকরি, দাবি ইডি-র।