সুজয়কৃষ্ণর বাড়ি থেকে ইডি বাজেয়াপ্ত করল একটি ফোন এবং নথি

বঙ্গ রাজনীতির প্রেক্ষাপটে শনিবার ছিল বেশ ঘটনাবহুল। একদিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই দপ্তরে তলব করা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। অন্যাদিকে রাজ্যের দশ জায়গায় তল্লাশি চালাতে দেখা যায় অপর এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র তরফ থেকে। এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের অভিযানের এই তালিকায় ছিল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র তথা কালীঘাটের কাকুর বাড়িও। কারণ, একাধিক সূত্রে নিয়োগ মামলায় উঠে এসেছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম। এরপরই শনিবার লাগাতার ১৫ ঘণ্টা তল্লাশি করা হয়েছে সুজয়কৃষ্ণের বাড়ি।
তবে এদিনের ইডি-র এই অভিযান নিয়ে সুজয়কৃষ্ণ জানান, ইডি আধিকারিকরা যখন ঢুকছিলেন তিনি তখন বাইরে ঘুরছিলেন। তদন্তকারী আধিকারিকদের দেখতে পেয়ে নিজেই তাঁদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। ওনাদের দেখে তিনি নিজেই ওদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর নিজের বাড়ি আসেন। আর এই প্রসঙ্গেই কালীঘাটের কাকুর দাবি, ‘এটাই আমি। সুজয় ভদ্র। ২০০ বার তদন্ত হোক। আমার কোনও অসুবিধা নেই।’
তবে শনিবার তল্লাশি পর সুজয়কৃষ্ণর একটি ফোন আর নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যান গোয়েন্দারা, এমনটাই সূত্রে খবর। এই প্রসঙ্গে অবশ্য সুজয়কৃষ্ণের দাবি, ‘ওরা দেখল প্রচুর ওষুধ আছে। শাড়ি আছে। কম্বল রয়েছে। আর কিছু কাগজ যেমন বাড়ির দলিল, ট্যাক্সের বিল, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এই সব দেখল।’ পাশাপাশি সুজয়কৃষ্ণ এও জানান, ‘১৫ ঘণ্টায় ১০ ভাগের ১ ভাগ তল্লাশি হয়েছে। বাড়ি যত কাগজ সব খুঁটিয়ে দেকতে সময় লেগেছে। ৬ বার জেরক্স হয়েছে। খাওয়া দওয়া করতে সময় লেগেছে।’
এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকদের প্রশংসাও করতে শোনা যায় সুজয়কৃষ্ণকে।বলেন, ‘লোকে ইডি সম্পর্কে বাজে কথা বলেছে। আজকেও ভাল তদন্ত হয়েছে। আমার অভিযোগ নেই ওনাদের বিরুদ্ধে।‘ তপবে তার মধ্যেও কোথাও ছিল একটা কটাক্ষও। ইডি-সিবিআই এর তল্লাশি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সুজয়কৃষ্ণ এও জানান, ‘ওনারা দেখছেন খড়ের গাদায় কোথাও যদি সূঁচ পাওয়া যায়। তাই খুঁজে দেখছেন।‘
প্রসঙ্গত, গোপাল দলপতির মুখে প্রথম শোনা গিয়েছিল এই সুজয়কৃষ্ণ তথা কালীঘাটের কাকু’র কথা। তিনি দাবি করেছিলেন, কুন্তল ঘোষ নাকি টাকা পৌঁছে দিতেন ‘কালীঘাটের কাকু’র কাছে। পরে গোয়েন্দারা জানতে পারেন ‘কালীঘাটের কাকু’ আসলে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তবে তিনি আদতে কালীঘাটের বাসিন্দা নন, বেহালার বাসিন্দা। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ যে তাঁকে কাকু বলে সম্বোধন করতেন, সে কথা স্বীকার করেন তিনি। দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen + 10 =