কয়লা-কাণ্ডের তদন্তে নেমেই বুধবার বালিগঞ্জ থেকে নগদ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় এবার বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। শাসক দলের সঙ্গে ওই টাকার যোগ নিয়ে জল্পনা শোনা যাচ্ছিল বুধবার সন্ধে থেকেই। এবার একেবারে ইডি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করল মন্ত্রীর কথা। এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গজরাজ গ্রুপের মালিক বিক্রম শিকারিয়া কোনও এক মন্ত্রীর অবৈধ টাকা সাদা করতেন বলেও দাবি করা হয় ইডি-র তরফ থেকে। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞপ্তির শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে, ইডি-র কাছে খবর ছিল, কোনও এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা কয়লা পাচারের কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা করছিলেন।প্রসঙ্গত, ইডি-র তরফ থেকে এদিন যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় তাতে বলা হয়েছে, বালিগঞ্জের ধাবার মালিক মনজিৎ সিং গ্রেওয়াল ওরফে জিট্টা ভাই-এর মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা করেছিলেন ওই নেতা। সেই সূত্র ধরেই লেনদেনের খোঁজ পায় ইডি। এরপরই তল্লাশি চালাতে গেলে উদ্ধার হয় ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই জোরাল হয় গজরাজ গ্রুপের সঙ্গে শাসক-যোগ।তবে এই ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান, বিজেপি নিজেদের দোষ ঢাকতে এভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগাচ্ছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আরও দাবি, সালাসালর গেস্ট হাউস নামে একটি অতিথিশালা সম্প্রতি কিনে নেন মনজিৎ সিং। বুধবারই সেই সম্পত্তির রেজিস্ট্রি হয় আলিপুরে সাব রেজিস্ট্রারের অফিসে। গেস্ট হাউসের দর মোট ১২ কোটি টাকা হলেও, খাতায়-কলমে মাত্র ৩ কোটি টাকা দেখানো হয়। বাকি ৯ কোটি টাকা নগদে দেওয়া হয়েছে বলেই ইডি সূত্রে খবর। আর সেই টাকা গজরাজ গ্রুপের কর্ণধার বিক্রম শিকারিয়ার অফিসে লেনদেন হয় বলেই জানতে পারে ইডি। ইডি-র বিজ্ঞপ্তির শেষ লাইনে লেখা হয়েছে, মন্ত্রীর অবৈধ টাকা সামলাতেন এই বিক্রম। তবে এখনও কোন নেতা বা মন্ত্রীর কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট নয় এই বিজ্ঞপ্তিতে। এদিকে মনজিৎ সিং-এর সঙ্গে শাসক দলের অনেক নেতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছে ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থা আরও জানিয়েছে, শুধু নথি নয়, এমন কিছু ছবি বা ভিডিয়ো তাদের হাতে এসেছে যা এই তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। এই প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘বিজেপি নেতাদের হাতেই বেশির ভাগ অবৈধ টাকা রয়েছে। সে সব দোষ ঢাকতেই অন্যের ওপর অভিযোগ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সারা ভারতে এমনটাই চলছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।’