ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডি (ED) দপ্তরে হাজিরা দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি (Sonia Gandhi)। প্রায় আড়াই ঘণ্টা জেরা করা হয় তাঁকে। জেরা পর্বের শেষে আজকের মতো ছাড়া পান তিনি। গত মাসেই প্রায় ৫৩ ঘণ্টার জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল রাহুল গান্ধিকে। কাছাকাছি সময়ে সোনিয়ারও হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তিনি ইডির মুখোমুখি হতে পারেননি। অবশেষে এদিন ১২টা নাগাদ দিল্লিতে ইডি দপ্তরে হাজিরা দেন সোনিয়া। প্রায় তিন ঘণ্টা জেরার পর ইডি দপ্তর ছাড়েন সোনিয়া। এদিকে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া গান্ধিকে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের প্রতিবাদে দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ দেখাতে পথে নামেন কংগ্রেসের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। চলে দফায় দফায় সংঘর্ষ। চলে লাঠি, জলকামান। পি চিদম্বরম, অজয় মাকেন-সহ কংগ্রেসের বেশ কয়েক জন নেতাকে আটক করেছে দিল্লি পুলিশ।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে ১২টা নাগাদ ৫ মহিলা আধিকারিকের একটি দল এদিন সোনিয়াকে জেরা শুরু করে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০টি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। এদিন সোনিয়ার সঙ্গে ইডি দপ্তরে যান তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কাও। তবে তিনি অন্য একটি ঘরে ছিলেন। আসলে সোনিয়া যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে যাতে দ্রুত তিনি মায়ের কাছে আসতে পারেন, তাই এই ব্যবস্থা। এদিকে এদিন সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যম দাবি করে, অসুস্থতার কারণে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কংগ্রেস নেত্রীকে। কিন্তু কংগ্রেসের প্রচার বিভাগের প্রধান জয়রাম রমেশ জানিয়ে দিয়েছেন, এই ধরনের দাবি ভিত্তিহীন। কিন্তু জানিয়ে দেওয়া হয়, আপাতত তাঁর আর ইডির দপ্তরে থাকার দরকার নেই। এমনকী, শুক্রবারও আসতে হবে না। পরে সোনিয়া জানান, যদি এরপরও কিছু প্রশ্ন বাকি থেকে থাকে, তিনি চাইলে সোমবারও আসতে পারেন।
রাহুলকে জেরার দিনেও কংগ্রেস নেতারা প্রবল বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। সোনিয়ার হাজিরার দিনও পথে নেমেছে কংগ্রেস। এবারে প্রতিবাদ কর্মসূচি আরও বৃহৎ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কংগ্রেস নেতাকর্মীরা ইডি দপ্তর ঘেরাও অভিযানে নেমে পড়েন। বুধবার রাত থেকেই দিল্লির ২৪ আকবর রোডের কংগ্রেসের সদর দপ্তরের সামনে লোহার ব্যারিকেডের প্রাচীর তৈরি করে প্রবেশে কড়াকড়ি শুরু করে দিল্লি পুলিশ। কিন্তু সকাল থেকেই আকবর রোডের অদূরে জমায়েত শুরু হয়। ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। দুপুরে সনিয়া ইডি দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার জন্য রওনা দেওয়ার পরে উত্তেজনার পারদ চড়ে। শুরু হয় বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভ ঠেকাতে দিল্লি পুলিশ লাঠি, জলকামান ব্যবহার করে। দিল্লিতে রেল এবং রাস্তাও অবরোধ করেন কংগ্রেস সমর্থকেরা।
রাজস্থান, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, ত্রিপুরা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে বৃহস্পতিবার অসুস্থ সনিয়াকে ইডির তলবের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়। বেঙ্গালুরুতে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ লাঠি চালালে উত্তেজিত কংগ্রেস সমর্থকেরা কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ।