ইডি-র সামনে আনল মানিক পুত্র শৌভিকের লন্ডন সফর, বিশদ তথ্য পেতে যোগাযোগ করা হচ্ছে বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে

প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের পুত্র শৌভিক ভট্টাচার্যের মামলায় এবার সামনে এল এক বিস্ফোরক তথ্য। বুধবার আদালতে তোলা হয় শৌভিককে। সেখানে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের আইনজীবীরা তাঁর লন্ডন যাত্রা নিয়ে একের পর এক অভিযোগ তোলেন। এদিন এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে দাবি করা হয়, লন্ডনে একাধিক সম্পত্তি রয়েছে শৌভকের। সেই কারণেই বারবার বিদেশ সফর করেছেন মানিক পুত্র। এ প্রসঙ্গে আদালতে টেনে আনা হয় শেক্সপিয়ারের হ্যামলেট প্রসঙ্গও।

এদিন আদালতে ইডি-র আইনজীবী জানান, ২০১৭ সালের মে এবং জুলাই মাসে লন্ডন গিয়েছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত মানিক ভট্টাচার্যের পুত্র শৌভিক। অথচ ইডি-র তদন্তকারী আধিকারিকদের সে ব্যাপারে কোনও তথ্যতথ্যই দেননি। শুধু তাই নয়, ওই দু’বারই আবাসিক ভিসার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন শৌভিক। এরপরই বিচারক এ প্রশ্নও ইডি-র আইনজীবীদের করেন যে, লন্ডনে শৌভিক ভট্টাচার্যের বাড়ি রয়েছে তা এ থেকে কী ভাবে প্রমাণিত হচ্ছে তা নিয়ে। প্রত্যুত্তরে ইডি-র তরফের আইনজীবীরা জানান, আবাসিক ভিসার আবেদন জানিয়েছিলেন শৌভিক। এর থেকেই প্রমাণিত তিনি তথ্য গোপন করছেন। এর প্রেক্ষিতে বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে ইডি-র আধিকারিকরা যোগাযোগ করেছেন বলেও জানানো হয় আদালতে। অভিবাসন দফতরের সাহায্য নিয়ে শৌভিকের লন্ডন যাত্রার খতিয়ান বের করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

এদিকে আদালত সূত্রে খবর, এদিন কাঠগড়ায় তোলা হলে মানিক পুত্র শৌভিক জানান, ‘২০১৬ সালের অগাস্ট মাসে আমি প্রথম লন্ডনে গিয়েছিলাম। পড়াশোনার জন্যই ভিসার আবেদন করেছিলাম। বায়োমেট্রিক রেসিডেন্ট পারমিট দেওয়া হয়েছিল সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। আমার কোনও বাড়ি নেই। আমি লন্ডনের বোর্ডিংয়ে থাকতাম। ২০১৭ সালে আমি কোনও ভিসার আবেদন করিনি।’

এ পর্যন্ত শুনেই এদিন রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। অন্যদিকে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপার ভূমিকাও। মৃত পিসেমশাইয়ের সঙ্গে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়টি নিয়ে এখনও রহস্য রয়ে গিয়েছে। এর আগে ছেলে এবং স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। এজলাসের বাইরে আইনজীবীদের ডেকে মানিককে বলতে শোনা যায়, ‘দয়া করে এমন কিছু করবেন না, যাতে আমার পরিবারকে জেলে যেতে হয়। হাতজোড় করে বলছি। আমি আইনের এক জন ছাত্র। আদালত সমন পাঠিয়েছে বলে ওঁরা হাজিরা দিয়েছেন। সেখানে কেন আপনারা বেল পিটিশন করলেন?’ প্রসঙ্গত, মানিককে গ্রেপ্তার করার পর পরই ইডি-র আধিকারিকেরা তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্যের নাম এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 5 =