হাজারো বিতর্ককে সঙ্গী করেই কাতারে শুরু ফুটবলের মহাযুদ্ধ। যেখানে উদ্বোধনী ম্যাচেই ইকুয়েডরের কাছে পরাস্ত আয়োজক দেশ। কিন্তু ম্যাচের ফলাফলের থেকেও দর্শকদের নজর কাড়ল গ্যালারির কর্মকাণ্ড। বিয়ারের দাবিতে গলা ফাটালেন ইকুয়েডর সমর্থকরা।
প্রথমে বলা হয়েছিল, কাতার বিশ্বকাপে বিয়ার খাওয়ায় কোনও বাধা নেই। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে রাজার আপত্তিতে বিয়ার বিক্রি বন্ধ করে আয়োজকরা। আর তাতেই শুরু হয়ে যায় তুমুল বিতর্ক। তবে কাতারের পাশে দাঁড়িয়ে সুর চড়ান ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফান্টিনো। তিনি দাবি করেন, তিন ঘণ্টা বিয়ার পান না করলেও বেঁচে থাকবেন দর্শকরা। কোনও দেশের নিয়মকানুন এভাবে রাতারাতি বদলে ফেলা যায় না বলেও জানান তিনি। কিন্তু দর্শকরা যে সেসব এক বাক্যে মেনে নিতে রাজি নন, সেটাই যেন উদ্বোধনী ম্যাচের গ্যালারি থেকে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন তাঁরা।
রবিবার আল বায়াত স্টেডিয়ামে বিনা বিয়ারেই ৯০ মিনিটের ম্যাচ দেখেন দর্শকরা। কিন্তু যেখানে দল দুই গোলে জিতছে, সেখানে বিয়ারের বোতল হাতে ‘চিয়ার্স’ বলে সেলিব্রেট করা যাচ্ছে না, এমনটা যেন মন থেকে মানতে পারছিলেন না ইকুয়েডর ফ্যানরা। আর সেই কারণেই একযোগে বিয়ার পানের অনুমতি চেয়ে চিৎকার করে ওঠেন তাঁরা। ‘আমরা বিয়ার চাই’। খেলার মাঝেই গ্যালারিতে ওঠে এই স্লোগান। আর সেই ভিডিওই ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই প্রতিবাদে কি কোনও বদল ঘটাবে? তা সময় বলবে। তবে কাতার যে কোনওভাবেই বিতর্ক থেকে বেরতে পারছে না, তা স্পষ্ট।
মাঠের ভিতরে বিয়ার পানের অনুমতি না থাকলেও অবশ্য ফ্যান জোনে বিয়ার পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে ইচ্ছামতো বিয়ার পানে কোনও বাধা নেই। শুধু তাই নয়, ইকুয়েডরের প্রথম গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যাওয়ার পরই কাতার সমর্থকদের সঙ্গে বচসায় জড়ান ইকুয়েডর ফ্যানরা। ‘টাকা দিয়ে সব কিনে নেওয়া হয়েছে’, হাতে ভঙ্গিতে এমনটাই দাবি করতে থাকেন তাঁরা। সেই ভিডিওটিও ভাইরাল হয়েছে। এদিকে বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম আয়োজক দেশ হিসাবে উদ্বোধনী ম্যাচে পরাস্ত হয়েছে কাতার।
ম্যাচে হার নিশ্চিত জেনেই আগেভাগে গ্যালারি ছাড়তে শুরু করেন কাতারের সমর্থকরা। ৬৭ হাজার দর্শক নিয়ে ম্যাচ শুরু হলেও বিরতিতে প্রায় ১৫,০০০ দর্শক স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যান। তবে গ্যালারি ফাঁকা হওয়ার আরেকটি কারণ চরম অব্যবস্থা। একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিশেষ অতিথিদের মাঠে বসার ব্যবস্থা করতে গিয়ে সাধারণ দর্শকদের দিকে নজর দেননি আয়োজকরা। মাঠে প্রবেশের একটি গেট বন্ধ থাকায় রাস্তায় রীতিমতো যানজট তৈরি হয়। শুরু থেকে খেলা দেখতে না পাওয়ার কারণেও অনেকে মাঠ ছাড়েন।