অপরাজিত তকমা থাকল না। এ বারের কলকাতা লিগে অপরাজিত ছিল ইস্টবেঙ্গল। সুপার সিক্স পর্বে এসে প্রথম হার। কিশোর ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এ দিন মুখোমুখি হয় মহমেডান স্পোর্টিং ও ইস্টবেঙ্গল। কলকাতা লিগে মিনি ডার্বি ঘিরে উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। ডার্বি বলে কথা। স্বাভাবিক ভাবেই সিনিয়র দলের কয়েকজন ফুটবলারকেও নামায় ইস্টবেঙ্গল। যদিও প্রথমার্ধে রক্ষণের ভুল ইস্টবেঙ্গলকে পিছিয়ে দেয়। ডুরান্ডে মরসুমের প্রথম ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের নায়ক নন্দকুমার শুরু থেকেই খেলেন। দ্বিতীয়ার্ধে নামানো হয় অভিজ্ঞ সৌভিক চক্রবর্তীকে। প্রথমার্ধেই ০-২ পিছিয়ে পড়া থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সহজ ছিল না। মহমেডান স্পোর্টিং এ মরসুমে অন্যতম ধারাবাহিক দল। লিগে সবচেয়ে ধারাবাহিক। আরও একটা জয়ে লিগে অনেকটা এগিয়ে গেল মহমেডান স্পোর্টিং। ইস্টবেঙ্গল ডুবল কোচ বিনো জর্জের পরিকল্পনাতেই। অভিজ্ঞ প্লেয়ারদের বেঞ্চে রেখে প্রথম একাদশ নামান। বিশেষ করে বলতে হয় রক্ষণ ভাগের কথা। তাদের ভুলে ম্যাচের মাত্র ৫ মিনিটেই এগিয়ে যায় মহমেডান স্পোর্টিং। গোল করেন ডেভিড। এ বারের লিগে অন্যতম আবিষ্কার ডেভিড লালহানসাঙ্গা। ডুরান্ডেও অনবদ্য খেলেছিলেন। ২১ মিনিটে আরও একটি গোল পেতে পারতেন। অনবদ্য ভাবে বল নিয়ে ইস্টবেঙ্গল বক্সে ঢুকে গিয়েছিলেন ডেভিড লালহানসাঙ্গা। শট নিতে যাবেন। শেষ মুহূর্তে গোলকিপার কমলজিৎ বল ক্লিয়ার করেন। ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স কেন ডেভিডকে বক্স অবধি এগনোর সুযোগ দিচ্ছিল, এটাই যেন বড় প্রশ্ন। ডিফেন্সের ভুল শোধরায়নি। মহমেডানের লিড নেওয়া যেন সময়ের অপেক্ষা ছিল। ৩৮ মিনিটে আরও একটা গোল মহমেডান স্পোর্টিংয়ের। এ বারও ডেভিড লালহানসাঙ্গা। দুই ডিফেন্ডার ঘিরে থাকা সত্ত্বেও অনবদ্য গোল। ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স শুরু থেকেই এলেমেলো। বারবার ম্যাচে সেই চিত্র ধরা পড়েছে। এ বারের লিগে ১৭তম গোল ডেভিডের! ২-০ এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মহমেডান স্পোর্টিং। বিরতিতে তিনটি পরিবর্তন করেন ইস্টবেঙ্গল কোচ বিনো জর্জ। পরিবর্ত হিসেবে নামেন সৌভিক চক্রবর্তী। তাতেই কিছুটা আক্রণের ধার বাড়ে ইস্টবেঙ্গলের। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে বিষ্ণুর ব্যাক পাস, সৌভিক চক্রবর্তীর শট ইর্শাদের শরীরে লাগে। রেফারি হ্যান্ডবলের জন্য পেনাল্টি দেন। ইর্শাদ প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন হ্যান্ডবল নয়, শরীরে বল লেগেছে। ৬০ মিনিটে নন্দ কুমারের পেনাল্টি গোলে ঘুরে দাঁড়ায় ইস্টবেঙ্গল। এর বেশি আর তেমন উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি করতে পারেনি লাল-হলুদ। শেষ দিকে সময় নষ্টের খেলায় নামে মহমেডান স্পোর্টিং। বার বার তাদের প্লেয়ারর মাঠে পড়ে যাচ্ছিলেন। সাত মিনিট অ্যাডেড টাইম দেওয়া হয়। তাতেও যেন হচ্ছিল না। ৯ মিনিট পর বাঁশি বাজান রেফারি। ২-১ গোলে জয় মহমেডানের। ম্যাচের পর দু-দলের প্লেয়াররাই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।