রেকর্ডের প্রত্যাশা ছিল। সম্ভাবনাও। হল না। আইএসএলের ইতিহাসে ইস্টবেঙ্গল কখনও টানা দুটি ম্যাচ জেতেনি। গত ম্যাচে হায়দরাবাদ এফসিকে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তার আগের দু-ম্যাচের তুলনায় ভালো পারফরম্যান্স। স্বাভাবিক ভাবেই মনে করা হয়েছিল, এ বার হয়তো টানা দুটি জয়ের রেকর্ড হতে পারে। কলিঙ্গ সুপার কাপের সেমিফাইনালে জামশেদপুরকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এ দিনও এগিয়েছিল। কিন্তু রেকর্ড হল না। সেই চেনা ছবি। এগিয়ে থেকেও হার ইস্টবেঙ্গলের।
ইস্টবেঙ্গলের নতুন বিদেশি ডিফেন্ডার আলেকসান্দার প্যান্টিচ শুরু থেকেই খেলেন। সার্বিয়ার প্রথম ফুটবলার হিসেবে ইস্টবেঙ্গলে অভিষেক প্যান্টিচের। সঙ্গে হিজাজি মাহের। ঘরের মাঠে শুরু থেকে দাপট জামশেদপুর এফসিরই। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার হাভিয়ের সিভেরিও এখন জামশেদপুর এফসিতে। প্রাক্তন দল ইস্টবেঙ্গলকে প্রবল চাপে রাখেন সিভেরিও। শুরু থেকে গোলের সুযোগও বেশি তৈরি করেছে খালিদ জামিলের প্রশিক্ষণাধীন জামশেদপুর এফসিই।
ইস্টবেঙ্গল আক্রমণ ভাগে নন্দকুমার তুলনামূলক ভালো পারফর্ম করছিলেন। যদিও প্রথম আধঘণ্টায় ইস্টবেঙ্গল তিনটি শট মারলেও একটিও টার্গেটে ছিল না। উল্টে প্রভসুখন গিল দুর্দান্ত কিছু সেভ না করলে পিছিয়ে পড়ত ইস্টবেঙ্গলই। অবশেষে ৪৫ মিনিটে দারুণ একটা সুযোগ। ক্লেটন সিলভার শট ডিফ্লেকশন হয়। নন্দকুমার সামনে ছিলেন। পাশে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার মইরাং। যদিও মইরাংয়ের সামনে থেকে গোলকিপারের পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে বল জড়ান নন্দকুমার। প্রথমার্থে জামশেদপুরের দাপট থাকলেও নন্দকুমারের গোলে লিড নেয় ইস্টবেঙ্গল।
নীশু কুমারের অনবদ্য ক্রস, হেড করেছিলেন পরিবর্ত হিসেবে নামা বিষ্ণু। ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি। পোস্টে লাগে তরুণ ফুটবলার বিষ্ণুর হেডার। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের লিড ২-০ হতে পারত। এক গোলের লিড কখনও সুরক্ষিত নয়। এই ধ্রুব সত্য ইস্টবেঙ্গলের যেন বুঝতে সময় লেগেছে। নির্ধারিত সময়ের ১১ মিনিটে নাওরেম মহেশ দুর্দান্ত একটা গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। বল ধরে গোলের দিকে এগচ্ছিলেন। গোলকিপারকে কাটিয়ে সহজেই প্রতিপক্ষ বক্সে ঢুকে গোল করতে পারতেন। যদিও দূর থেকেই শট নেন। গোলকিপারের ডিফ্লেকশনে তা পোস্টের বাইরে।
ইস্টবেঙ্গলের স্বপ্নে ধাক্কা ৮১ মিনিটে। সুপার সাব রেই চিকাভার গোল। সমতা ফেরায় জামশেদপুর। অ্যাডেড টাইমে বড় ভুলটা যেন করলেন রাকিপ। ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ছিল জামশেদপুর। গোলকিপার টিপি রেহনেশ দ্রুত বল রিলিজ করেন। চিমা চুকু বল ধরেই ক্ষিপ্র গতিতে ইস্টবেঙ্গল বক্সে এগচ্ছিলেন। রাকিব তাঁকে আটকান, রেফারির সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। রাকিপকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি-কিক। মানজোরোর জোরালো কিক। ইস্টবেঙ্গল ওয়ালের ডিফ্লেকশনে গোলে। অ্যাডেড টাইমের শেষ মুহূর্তে গোল। এগিয়ে থেকেও হার ইস্টবেঙ্গলের।