কলকাতা ডার্বি, ইস্টবেঙ্গল শিবিরের জন্য না জিতলেই ‘নয়’

কেমন হতে পারে শনিবারের সন্ধেটা! সেটা এখনই বোঝা যাবে না। আন্দাজ করা যেতে পারে মাত্র। বরং, শুক্রবারের সন্ধে নিয়ে একটু কথা বলা যাক। একটা রাত পেরোলেই বড় ম্যাচ। তারই প্রস্তুতি সারতে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা মাঠে এলেন। একটা সময় ডার্বির আগের দিনের চিত্র আলাদা মাত্রা রাখত। সকাল সকাল দুই ক্লাবের মাঠের বাইরে দর্শকদের ভিড়ের মতো সারি সারি গাড়িও। কিন্তু শুক্রবার অন্য় একটা চিত্র নজরে পড়ল। ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা টোটো করে প্রস্তুতিতে এলেন! হঠাৎ এই দৃশ্য চমকে দেওয়ার মতোই। এর কারণ কী! টানা আটটি ডার্বি জিতেছে মোহনবাগান। সমর্থকরা আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। তেমনই ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য মরিয়া ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের আগের দিন একে অপরকে সমীহ করার পালা। প্রতিটি ডার্বি নায়ক তৈরি করে। ম্যাচের আগে কোনও দলকেই এগিয়ে পিছিয়ে রাখা যায় না। এই ম্যাচেও কি নতুন নায়ক পাওয়া যাবে? যেতেও পারে। মোহনবাগান যেমন গত আটটি ডার্বির পরিসংখ্যানে অনেক অনেক এগিয়ে, ইস্টবেঙ্গল ‘হার না মানা’ মানসিকতার দিক থেকে খুব পিছিয়ে নেই। টোটো করে আসারও নাকি অন্যতম কারণ এটাই! আয়োজকদের তরফে গাড়ি পাঠানোর কথা। প্রস্তুতিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে, তাই ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা টোটো করেই মাঠে! এই মরিয়া ভাবটা ম্যাচেও দেখা যাওয়ার অপেক্ষায় সমর্থকরা। এ বারের ডুরান্ডে প্রথম দু-ম্যাচ জিতেছে মোহনবাগান। বাংলাদেশ আর্মি ফুটবল ক্লাবের বিরুদ্ধে ৫ গোল মেরেছিল সবুজ মেরুন। দ্বিতীয় ম্যাচে পঞ্জাব এফসির বিরুদ্ধে ২-০ জয়। ডার্বির আগে বিশ্বকাপার জেসন কামিন্স সহ বেশ কয়েকজন প্লেয়ারকে নথিভূক্ত করেছে মোহনবাগান। কোচ হুয়ান ফেরান্দো অবশ্য বলছেন, তাঁদের কাছে ডার্বি আরও একটা ম্যাচ, এএফসি কাপের খেলা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সমর্থকদের কথা ভেবে, এই ম্যাচকেও কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন নতুন প্লেয়ারদের নথিভুক্ত করাই তার প্রমাণ। এই ম্যাচের আগে সুস্থ মাথাব্যাথাও রয়েছে ফেরান্দোর। দলে একঝাঁক তারকা ফুটবলার। সকলেই ফিট। ফলে প্রথম একাদশে কাকে ছেড়ে কাকে খেলাবেন, বেশ চিন্তায় মোহনবাগান কোচ। ইস্টবেঙ্গল শিবিরে পরিস্থিতি অন্যরকম। গত বারের দলের সঙ্গে মিল নেই। ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে হাতে গোনা কয়েকজনের। ম্যাচের দিন শহরে পৌঁছনোর কথা ক্লেটন সিলভার। তাঁকে বেঞ্চে রেখে প্রতিপক্ষ শিবিরে কিছুটা চাপ তৈরি করতে পারেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। তাঁর কাছেও তো ডার্বি প্রথম! আর এটাই যেন ইস্টবেঙ্গলের ইউএসপি। প্রতিপক্ষর কাছে অচেনা। ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গী আন্ডারডগ তকমা। ড্র দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা ইস্টবেঙ্গলের কাছে ডার্বি অনেক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচ জিতলে তবেই নকআউটের সম্ভাবনা জিইয়ে থাকবে। আর সমর্থকদের কাছে, সমর্থকদের জন্য ইস্টবেঙ্গলের এই ডার্বি না জিতলেই ‘নয়’। মোহনবাগানের লক্ষ্য টানা ন’টি ডার্বি জয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − three =