গত কয়েক মরসুম ধরে ইস্টবেঙ্গলের যেন এটাই ট্র্যাডিশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধারাবাহিক ভাবে কয়েক মরসুম হতাশ করেছে লাল-হলুদ। এ বার দলের খোলনলচে বদলে ফেলা হয়। ডুরান্ড কাপে অনবদ্য পারফরম্যান্সে ভরসা দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলেও শুরুটা ড্র দিয়ে হয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে জয় সমর্থকদের প্রত্যাশা বাড়িয়ছিল। কিন্তু সমর্থকদের স্বস্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। টানা তিন ম্যাচ হেরে ফের ‘চেনা’ মেজাজে ফিরেছিল ইস্টবেঙ্গল। চেন্নায়িন ম্যাচের আগে ক্যাপ্টেন ক্লেটন সিলভা জানিয়েছিলেন, ভুল শুধরে নিলে ইস্টবেঙ্গলে জোয়ার আসবে। অ্যাওয়ে ম্যাচে চেন্নায়িনের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পারল না ইস্টবেঙ্গল। মাঠে যেমন অন্ধকার নেমেছিল, ইস্টবেঙ্গলের অন্ধকারও কাটল না।
দীর্ঘ বিরতির পর মাঠে নামল ইস্টবেঙ্গল। আইএসএলের লম্বা বিরতিতেও ফুটবলারদের অনুশীলনে ছুটি দেননি কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। চোটের জন্য বাইরে ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার বোরহা। কলকাতা লিগে নজরকাড়া বিষ্ণুকে এ দিন প্রথম এগারোয় রাখেন কুয়াদ্রাত। ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণে বেশ নজর কাড়লেন এই কেরালাইট। চেন্নাইয়ের ডিফেন্ডারদের ব্যস্ত রাখলেন তিনি। লাল-হলুদের গোলও এল তাঁর দৌলতে।
খেলার ৬ মিনিটের মাথায় হিজাজির হেড বাইরে যায়। বিষ্ণুর শট চেন্নাইয়ের ফুটবলারের পায়ে লেগে বাইরে গেলে কর্নার পায় ইস্টবেঙ্গল। সেখান থেকে মহেশের কর্নারে হেড করেন হিজাজি। তার এক মিনিট বাদেই চেন্নায়িন এফসির আয়ুশ অধিকারীর দুরপাল্লার শট বাঁচান প্রভসুখন গিল। ১৫ মিনিটে সহজ সুযোগ মিস করেন চেন্নাইয়ের জর্ডন মারে। এক হাত দূরে দাঁড়িয়ে থাকা গোলকিপারকে পেয়েও বল মারেন বাইরে। আলো বিভ্রাটের জেরে কিছুক্ষণ ম্যাচ বন্ধ থাকে। খেলার ১৮ মিনিটে জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের বেশ কয়েকটা বাতিস্তম্ভ নিভে যায়। ম্যাচ শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই কাঙ্খিত গোলের দেখা পায় ইস্টবেঙ্গল। ২৯ মিনিটের বিষ্ণুর বিষাক্ত মাইনাস ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন আয়ুশ অধিকারী। আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল।
প্রথমার্ধে ম্যাচে ফেরার বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে চেন্নাই। ভিন্সি ব্যারেটো, ক্রিভেলোরা ঘুম উড়িয়ে দেন লাল-হলুদ রক্ষণের। জর্ডন মারে নার্সারি স্তরের মিস না করলে ব্যবধান তখনই অন্যরকম হতে পারত। ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার প্রভসুখন গিলও তিন কাঠির তলায় দলকে আগলে রাখেন। কিন্তু তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করা যায়নি। নির্ধারিত সময়ের চার মিনিট আগে চেন্নায়িনের হয়ে সমতা ফেরান নিনথোই। ম্যাচের দুটি গোলই এল চেন্নায়িনের সৌজন্যে। জিতল না কেউ!