ডাচদের গোল নিয়ে দ্বন্দ্ব, ইউরোর প্রথম গোলশূন্য ড্র

চলতি ইউরোর প্রথম গোলশূন্য ড্র। লিপজিগের রেড বুল এরিনায় অমীমাংসিত ফ্রান্স-নেদারল্যান্ডস‌ ম্যাচ। শুক্রবার রাতে কোনও দলই গোল করতে পারেনি। কিলিয়ান এমবাপের অনুপস্থিতিতে আটকে গেল ফ্রান্স। অর্থাৎ প্রি কোয়ার্টারের ছাড়পত্র পেতে গ্রুপের শেষ ম্যাচের অপেক্ষায় থাকতে হবে। দুই ম্যাচের শেষে ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের পয়েন্ট ৪। মঙ্গলবার পোল্যান্ডের মুখোমুখি ফ্রান্স। অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে নামবে নেদারল্যান্ডস। দুই ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ ফরাসিরা। অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে আত্মঘাতী গোলে জিতেছিল দিদিয়ের দেশঁর দল। দ্বিতীয় ম্যাচেও গোলের খাতা খুলতে পারল না বিশ্বকাপের রানার্সরা‌‌। অসংখ্য গোল মিস। তারমধ্যে অধিকাংশ সুযোগ নষ্ট করেন গ্রিজম্যান। দুটো সিটার মিস। এই পর্যায় এরকম মিস ক্ষমার অযোগ্য। ভাগ্যের জোরে এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে নেদারল্যান্ডসের হয়ে গোল করেন সিমন্স জাভি। ‘ভার’এর সাহায্য নিয়ে অফসাইডের জন্য বাতিল করা হয় গোল। কিন্তু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। দেখে মনে হয়েছে ন্যায্য গোল ছিল। ডাচদের বিরুদ্ধে গিয়েছে সিদ্ধান্ত।

নাকের চোটের জন্য প্রথম একাদশে ছিলেন না এমবাপে। আঠারো জনের দলে রাখা হলেও খেলানো হয়নি। তারকা ফুটবলারের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন আতোঁয়া গ্রিজম্যান। কিন্তু দলকে বৈতরণী পার করাতে পারলেন না। ম্যাচের প্রথমদিকে গতিময় ফুটবল দুই দলেরই। এমবাপের অভাব অনুভব হয়নি। বল পজেশন থেকে পাসিং, গোল লক্ষ্য করে শট, সবেতেই এগিয়ে ছিল ফ্রান্স। জিতলেই গ্রুপ শীর্ষে থেকে শেষ ষোলোর হাতছানি। তাই প্রথম থেকেই গোলের জন্য ঝাঁপায় ফ্রান্স। কিন্তু একাধিক মিস গ্রিজম্যান, ডেম্বেলে, থুরামদের। ফ্রান্সের খেলা মনে করিয়ে দেয় ২৪ ঘণ্টা আগের স্পেনকে। মোরাতা, জামালরা অবশ্য অনেক বেশি ফ্লি ফ্লোয়িং ফুটবল খেলে। তবে সুযোগ নষ্টের ক্ষেত্রে এদিন দুই দলের মিল ছিল। তারমধ্যে সেরা সুযোগ ম্যাচের ১৪ মিনিটের মাথায়। বক্সের মধ্যে বল পান ব়্যাবিও। নিজেই শট নিতে পারতেন। কিন্তু পাস বাড়ান গ্রিজম্যানকে। বল রিসিভ করতে গিয়ে পড়ে যান ফ্রান্সের অধিনায়ক। নিশ্চিত সিটার মিস। তার কয়েক মিনিটের মধ্যে আবার সুযোগ পান গ্রিজম্যান। কন্তের থেকে বল পেয়ে বাইরে মারেন। তার দু’মিনিটের মাথায় প্রথম পজিটিভ সুযোগ ডাচদের। গাকপোর শট বাঁচান ফরাসি কিপার। ম্যাচের ২৮ মিনিটে বক্সের ওপর দিয়ে বল ভাসিয়ে দেন থুরাম। প্রথমার্ধে অনেক বেশি পরিকল্পিত ফুটবল খেলে ফ্রান্স। কিন্তু সেই ফিনিশিংয়ের অভাব। বিরতির আগে ব়্যাবিয়োর ক্রস থেকে গ্রিজম্যানের হেড সরাসরি তালুবন্দি করেন ডাচ কিপার।

দ্বিতীয়ার্ধেও সেই একই সমস্যা। ডেম্বেলে, ব়্যাবিওরা বক্সে একাধিক ক্রস ভাসালেও গোল হয়নি। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে আবার সহজ সুযোগ মিস গ্রিজম্যানের। ফাইনাল থার্ডে দারুণ পাসিং। অসাধারণ বিল্ড আপ। গোলের একহাত দূরে কন্তের থেকে বল পেলেও দুর্বল শট গ্রিজম্যানের। বাঁচানোর সুযোগ পায় নেদারল্যান্ডসের কিপার। তার দু’মিনিট আগে থুরামের শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে ভাগ্যের জোরে বেঁচে যায় ফ্রান্স।গোল করে নেদারল্যান্ডসকে এগিয়ে দিয়েছিলেন জাভি সিমন্স। কিন্তু অফসাইডের জন্য গোল বাতিল করে দেন রেফারি। ডাচ ফুটবলারদের প্রতিবাদে ‘ভার’ এর সাহায্য নেওয়া হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত বদলায়নি। সাইমন্স শট নেওয়ার সময় ডামফ্রিস অফসাইডে ছিল। রেফারির দাবি, তিনি সামনে দাঁড়িয়ে থাকায় ফ্রান্সের কিপার মাইগনান ঝাঁপিয়ে পড়ে বল বাঁচাতে পারেনি। বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। এক সপ্তাহ হয়েছে ইউরোর।‌ দু’দলের একাধিক সুযোগ নষ্টের ফলে প্রথম গোলশূন্য ড্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − ten =