পরিসংখ্যান বদলানো যায়। তার জন্য মরিয়া প্রচেষ্টা থাকা প্রয়োজন। মোহনবাগান সেটাই করে দেখাল। ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ মুম্বই সিটি এফসি। প্রমাদ গুনছিলেন মোহনবাগান সমর্থকরা। এই প্রতিপক্ষ যে শক্ত গাঁট! এর আগে সাত বার মুখোমুখি হয়েছে মোহনবাগান ও মুম্বই সিটি এফসি। জয়ের মুখ দেখেনি মোহনবাগান। সেরা সাফল্য বলতে, ড্র। তাদের বিরুদ্ধে নকআউটের ম্যাচ। সেমিফাইনালে যেতে হলে পরিসংখ্যান বদলাতে হত। গড়তে হত ইতিহাস। সেটাই করে দেখাল সবুজ মেরুন। শক্তিশালী মুম্বই সিটি এফসিকে ৩-১’এ হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল মোহনবাগান। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ঐতিহাসিক জয় সবুজ মেরুনের। ম্যাচের শুরু থেকেই মরিয়া চেষ্টায় দেখা যায় মোহনবাগানকে। তিন জনে ডিফেন্স সাজিয়েছিলেন মুম্বই সিটি কোচ ডেস বাকিংহাম। শুরুতেই বিপদে পড়ে তাঁর রক্ষণ। দুরন্ত গতিতে ঢুকছিলেন বিশ্বকাপার জেসন কামিন্স। দিশেহারা মুম্বই সিটি গোলকিপার লাচেনপা। ডাইভ দিয়েছিলেন। বল ধরতে পারেননি। কামিন্সকে অবৈধ ভাবে আটকানোয় পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পট কিক নেন কামিন্সই। ৯ মিনিটে তাঁর পেনাল্টি গোলে ১-০ এগিয়ে যায় মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। গ্যালারিতে বিরাট গর্জন। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের অন্যতম সেরা দল মুম্বই সিটি এফসি। সবুজ মেরুনের শক্ত গাঁট মুম্বই। সাত বারের চেষ্টায় এক বারও তাদের হারাতে পারেনি। হয় ড্র হয়েছে নয়তো হার। ডুরান্ডের কোয়ার্টার ৯ মিনিটেই তাদের বিরুদ্ধে এগিয়ে যাওয়া, মোহনবাগানকে আত্মবিশ্বাস দেয়। মুম্বইয়ের মতো শক্তিশালী দলও পাল্টা আঘাত করবে, প্রত্যাশিত। ২৮ মিনিটেই সমতা ফেরান মুম্বইয়ের আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার পেরেরা দিয়াজ। মোহনবাগান রক্ষণ বল ফলো করলেও মাঝ খান দিয়ে পেরেরা দিয়াজ ঢুকছিলেন, তাঁকে মার্ক করেনি। গ্রুপ পর্বে চারটি গোল করেছিলেন। নকআউটেও গোল করলেন দিয়াজ। মরিয়া মোহনবাগানের বিরুদ্ধে তাঁর গোল কোনও পার্থক্য গড়তে পারেনি। দু-মিনিটের ব্যবধানেই ফের লিড নেয় মোহনবাগান। কর্নার থেকে মুভ তৈরি হয়। বক্সের বাঁ দিক থেকে সেন্টার হুগো বোমাসের। হেডে গোল করেন মনবীর। প্রথমার্ধের শেষ দিকে মনবীর স্বার্থপর চেষ্টা না করলে ব্যবধান বাড়াতে পারতো সবুজ মেরুন। আনমার্কড ছিলেন মনবীর। কাছাকাছি চার সতীর্থ। পাস দিলে হয়তো ভালো করতেন। নিজেই শট নিলেন। ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে। বিরতিতে ২-১ গোলে এগিয়ে থাকলেও ঝুঁকি ছিলই। প্রথম ঘণ্টা পেরোতেই সেই ঝুঁকি কমল আনোয়ারের গোলে। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে আশিক কুরুনিয়ানের সেন্টার। হেডে গোল তরুণ ডিফেন্ডার আনোয়ার আলির। অতি আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে মুম্বই সিটি এফসি ভুল করেছিল। তার সুযোগ নিতে ভুল করেনি সবুজ মেরুন। শেষ অবধি ৩-১ ব্যবধানে জয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে হুয়ান ফেরান্দোর দল। শেষ চারে তাদের প্রতিপক্ষ এফসি গোয়া।