পার্থর আংটি কাণ্ডে ফাঁপরে প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার, থানায় দায়ের অভিযোগ

কলকাতা: জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আঙুলে নিয়ম বহির্ভূতভাবে আংটি ছিল কেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে। এবার সেই ঘটনায় প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তীর  বিরুদ্ধে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন ডিআইজি (কারা)। প্রসঙ্গত এই মামলায় সংশোধনাগারের সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। আদালতের নির্দেশ মেনেই এবার থানায় অভিযোগ দায়ের হল।

সূত্রের খবর, জেল সুপারের বিরুদ্ধে জেলের আইন ভাঙা ও কর্তব্যের গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আঙুলে একটি আংটি থাকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। কারণ, জেলে থাকা বিচারাধীন বন্দিদের কোনও অংলকার পরারই নিয়ম নেই।  অভিযোগ উঠেছিল, নিয়ম না থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ ৯ মাস ধরে জেলের মধ্যে হাতে আংটি পরে ছিলেন তিনি। আদালতে এই নিয়ে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইডির আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ‘জেল কোড’ অনুসারে সংশোধনাগারে কোনও অলঙ্কার পরা যায় না। কিন্তু পার্থ সেই নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। তবে আদালতের হস্তক্ষেপে পরে সেই আংটি খুলে ফেলেন পার্থ। তিনি আদালতে দাবি করেছিলেন, স্বাস্থ্যের কারণেই ওই আংটি তিনি পরেছিলেন। তাঁকে জেলে কেউ আংটি পরতে বারণ করেননি বলেও দাবি করেছিলেন পার্থ।
শুনানির সময় বিচারক পার্থকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আপনি তো জেলবন্দি। আপনার হাতে এতগুলো আংটি কেন? আপনি জানেন না যে, জেলবন্দিদের হাতে আংটি রাখা যায় না?’ সেই প্রশ্নের উত্তরে পার্থ জানিয়েছিলেন যে, তিনি নাকি নিজের স্বাস্থ্যের জন্য এই আংটি পরেন।

কিন্তু জেলের মধ্যে কোনওধরনের অলঙ্কার পরারই নিয়ম নেই। ইডি জানিয়েছিল, যখন তারা পার্থকে নাকতলার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসেছিল, তখন আংটি খুলিয়েই আনা হয়েছিল। কিন্তু তারপর কীভাবে তিনি আংটি পেলেন তা জানেন না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। তারপরই জেল কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় তোলেন বিচারক। কেন পার্থ জেলে থাকা অবস্থাতেও হাতে আংটি পরে রয়েছেন, তা সবিস্তারে লিখিত আকারে নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। দেবাশিস আদালতে জানিয়েছিলেন, পার্থের আঙুল ফুলে থাকার কারণে তাঁর আংটি খোলা যায়নি। জেল সুপারের দেওয়া জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। তারপরই জেল সুপারের বিরুদ্ধে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।

উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্সির জেল সুপারকে এর আগে একবার তলব করেছিল সিবিআই। কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় দেবাশিস চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এমনকী প্রেসিডেন্সি জেলের ডাক্তারকেও ডাকা হয়েছিল নিজাম প্যালেসে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 3 =