অনাবৃষ্টির কারণে দুর্গা প্রতিমার চাঁদমালা তৈরিতে টান পড়েছে শোলার জোগানে

অশোকনগর: বাজারে রয়েছে যথেষ্ট চাহিদা তবে অনাবৃষ্টির কারণে দুর্গা (Durga) প্রতিমার চাঁদমালা তৈরিতে তাই টান পড়েছে শোলার (Shola) জোগানে। সেই সঙ্গে বেড়েছে চাঁদমালা তৈরির কাঁচামালের দাম। নেই সরকারি কোনো অনুদান সমস্যায় চাঁদমালা তৈরির শিল্পীরা। হাতে গোনা কটা দিন পরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। স্বভাবতই ব্যস্ততার ছবি ধরা পড়েছে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত থাকা পালপাড়ায়, মণ্ডপে মণ্ডপে মণ্ডপ তৈরিতে ব্যস্ত মণ্ডপ শিল্পীরা, ঠিক তেমনই মাকে সাজিয়ে তোলার জন্য চাঁদমালা তৈরিতে ব্যস্ততার ছবি ধরা পড়েছে উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে। দেখা গেল শতাধিক পরিবারের কয়েকশো শ্রমিক নিয়ে দিন রাত এক করে চলছে চাঁদমালা তৈরির কাজে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শোলা ও কাগজের সঙ্গে বিভিন্ন ডিজাইনের উপকরণ দিয়ে তৈরি হচ্ছে চাঁদমালা। এই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের শতাধিক শোলা শিল্পী পরিবার। সারা বছর শোলা দিয়ে তারা অন্যান্য উপকরণ তৈরি করলেও পুজোর দু-মাস আগে থেকে শুরু হয়ে যায় চাঁদমালা তৈরির কাজ। চাঁদমালা তৈরির জন্য কাঁচামালের দাম এবার বেড়ে গিয়েছে, তাই চাঁদমালার দামও যে বাড়বে সেটা বলাই বাহুল্য। অশোকনগরের শোলা শিল্পীদের হাতের তৈরি চাঁদমালা কলকাতার বড়বাজার-সহ পাড়ি দিচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। শোলা শিল্পীরা জানালেন, এবার সেভাবে বৃষ্টির দেখা মেলেনি তাই শোলার যোগানে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের, প্রায় দ্বিগুণ দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে শোলা। তবে শোলা শিল্পীরা জানিয়েছেন বাজারে যথেষ্ট চাঁদমালার চাহিদা থাকলেও চাঁদমালা তৈরির কাঁচামালের অভাবের জন্য দুশ্চিন্তায় শোলা শিল্পীরা। অশোকনগরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শোলা শিল্পর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কয়েকশো পরিবার। মূলত পুজোর আগেই তাদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। তবে এই শোলা শিল্পীদের সরকারি কোনো অনুদান না থাকায় তাদের অনেক সময় আর্থিক সমস্যায় পড়তে হয়। সরকারি সাহায্যে মিললে শোলা শিল্পীরা আরো ভালো করে তাদের শিল্পকলার কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তারা। অনেকেই আবার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায়। চাঁদমালা কারখানার মালিক বীরেন অধিকারী বলেন, কাঁচামালের ভীষণ দাম,তাই এবছর বাজারে চাহিদা থাকলেও অর্থের অভাবে সেই অর্থে মালের জোগান দিতে পাচ্ছি না। বেশ কিছু শোলা শিল্পী কাজ করে তাদেরকেও সেই অর্থে কাজ দিতে পারছি না অনাবৃষ্টির কারণে শোলার জোগান নেই। সরকারি সহযোগিতাও জুটছে না তাই অনেক সমস্যার মধ্যে রয়েছি। শোলা শিল্পী এবং রাখাল সাহা জানান, প্রতিবছরই আমরা এই পুজোর সময়টার অপেক্ষায় থাকি তবে এই বছর অনাবৃষ্টির কারণে শোলা আসছে না ফলে মাল তৈরি করতে পারছি না। দীর্ঘ দু’বছর করোনা পরিস্থিতি ছিল এ বছর চাহিদা অনেক বেশি কিন্তু কাঁচামাল কিনে চাঁদমালা তৈরির মতো পরিস্থিতি আমাদের নেই। অন্যদিকে বড় বাজার থেকে কাঁচামাল কিনে আনতে গেলেও অনেক দামে চাঁদমালা বিক্রি করতে হবে তাই আমরা চাই সরকার আমাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − 15 =