যাদবপুরে পড়ুয়ামৃত্যুর ঘটনার পর হঠাৎ করেই সামনে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষক অরিত্র মজুমদারের নাম। যদিও তিনি যাদবপুরে অনেক বেশি পরিচিত ‘আলু’ নামে। যাদবপুরে প্রথম বর্ষের ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনার পর থেকে ‘আলু’-র কোন হদিশ না মেলায় ঘনীভূত হচ্ছিল রহস্য। মঙ্গলবার সোশ্যাল সাইটে বেশ কিছু পোস্ট করে বেশ কিছু প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করে দিয়েছিলেন এই অরিত্র মজুমদার। অবশেষে নিজের অনুপস্থিতির সপক্ষে একাধিক ‘সাফাই’ দিয়ে শহরের ফেরার কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দাপুটে ডিএসএফ নেতা। এরপর শহরের ফিরতেই মঙ্গলবার রাতে তাঁকে যাদবপুর থানায় তলব করা হয়। দীর্ঘক্ষণ থানায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন পুলিশ আধিকারিকরা।
এরপর ফের বুধবার ফের যাদবপুর ক্যাম্পাসে দেখা যায় ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদের পদত্যাগী চেয়ারম্যানকে। পডু়য়ামৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্তে কমিটির মুখোমুখি হন অরিত্র। মঙ্গলবারই তাঁকে তলব করা হয়েছিল। তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একাধিক বিষয়ে মুখ খোলেন এই ডিএসএফ নেতা।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অরিত্র বলেন, ‘একটাই কথা বলতে চাই, অবিলম্বে দোষীরা চিহ্নিত হোক ও শাস্তি পাক। যেহেতু একটা তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে, তাই বাইরে আমার কিছু বলার নেই। তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে যেখানে যে যা কিছু জানতে চাইবে সব বলব। যা তথ্য চাইবে আমি সব দেব।’ তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে যেতেন কি না, সেই প্রশ্নের মুখে কুলুপ আঁটতে দেখা যায় অরিত্রকে।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, একটি মোবাইল কথোপকথন থেকে প্রথম সামনে আসে অরিত্র মজুমদার ওরফে আলুর নাম। ঘটনার পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ছিলেন বলে দাবি করা হয়। এমনকী জেনারেল বডি মিটিংয়ের সময়ও অরিত্র যাদবপুর হস্টেলে ছিলেন বলে বিভিন্ন তরফে দাবি ওঠে। এমনকী পড়ুয়ামৃত্যুর ঘটনা জড়িতদের অনেকের সঙ্গে অরিত্র ‘ঘনিষ্ঠ’ যোগাযোগ ছিল বলে এমন দাবিও করতে দেখা যায় অনেককে। এরপরই হঠাৎ করে তাঁর গায়েব হয়ে যাওয়া নিয়ে আরও ঘনাচ্ছিল রহস্য।
তবে এরপর মঙ্গলবার একটি ফেসবুক পোস্টে ট্রেন ও ফ্লাইটের টিকিট পোস্ট করে অরিত্র লেখেন, ‘আমি ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ ১০ অগাস্ট রাজধানী এক্সপ্রেসে দিল্লি যাই। সেখান থেকে শ্রীনগরের বিমানে ট্রেকিং করতে কাশ্মীর গিয়েছিলাম। যেখানে গিয়েছিলাম সেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক ছিল না বলে খোঁজ খবর পাইনি। আমার নামে অনেকেই অনেক কথা বলছেন। আমি কলকাতা ফিরছি। বেশ কিছুদিন ধরেই আমি হস্টেলে যাইনি। যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে আমি রাজি।’ এদিকে আবার অরিত্রর ফেসবুক পোস্টে অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি করেছে বিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতারা।