এ এক অদ্ভূত দৃশ্য! গায়ে বিয়ের পোশাক। মাথায় বিয়ের পাগড়ি। সঙ্গে ব্যান্ড পার্টি। বাজনা বাজাচ্ছে। তারমধ্যেই ঘোড়ায় চড়ে পাত্র বেরিয়েছেন বউ খুঁজতে! রীতিমতো পোস্টার হাতে পাত্রী খুঁজতে বেরিয়েছেন পাত্রদের দল! দেখে-শুনে তাঁদের নিয়ে হাসি-মশকরা অনেকেই করতে পারেন। কিন্তু তাতে তাঁদের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। কারণ তাঁরা নিরুপায়। সোজাসাপ্টা ভাষায় স্বীকারোক্তি তাঁদের। এই ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের সোলারপুরে।
বিয়ের পোশাকে হাতে বউ খোঁজার পোস্টার নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে পাত্রদের দল হাজির হয় জেলাশাসকের অফিসে। সেখানে এসে তাঁরা তাঁদের দাবি পেশ করেন। তাঁরা দাবি করেন, তাঁদের বউ চাই। কিন্তু পাত্রী খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই তাঁদের জন্য পাত্রী খুঁজে দিতে হবে। আর সেই কারণেই তাঁরা দলবেঁধে হাজির হয়েছেন জেলাশাসকের অফিসে। আপাত দৃষ্টিতে ঘটনা যেমন অদ্ভূত, তেমন মজারও বটে। তবে এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সামাজিক সমস্যা। কী সেই সমস্যা? সমস্যা হল নারী-পুরুষের সংখ্যার অনুপাত নিয়ে। পুত্রসন্তানের নিরিখে কন্যাসন্তান কমে যাচ্ছে মহারাষ্ট্র রাজ্যটিতে। অভিযোগ এমনটাই।
তাই রাজ্যে নারী-পুরুষের অনুপাত উন্নত করার লক্ষ্যেই এই অভিনব শোভাযাত্রার আয়োজন করে ‘ব্রাইডগ্রুম মোর্চা’। পরে তারা জেলাশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দেয়। যেখানে মোর্চার তরফে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হয়। তাঁদের স্পষ্ট কথা, ‘মানুষ আমাদের মোর্চাকে নিয়ে হাসি-মশকরা করতেই পারে, কিন্তু এটাই হচ্ছে করুণ বাস্তব। বিবাহযোগ্য পাত্ররা এখানে তাঁদের যোগ্য পাত্রী পাচ্ছে না। কারণ এই রাজ্যে নারী-পুরুষের অনুপাত এতটাই কম। রাজ্যে ১০০০ জন ছেলে প্রতি ৮৮৯ জন মেয়ে! এই অসাম্যের একটাই কারণ। তা হচ্ছে কন্যাভ্রূণ হত্যা। আর সরকার-ই এই বৈষম্যের পিছনে দায়ি।’