কলকাতার আকাশ আজ যেন আরও ভারী। চিকিৎসক, অলিম্পিয়ান ও সমাজসেবী হিসেবে সবার প্রিয় মুখ ড. ভেস আগাপিতো পেজ আর নেই। দীর্ঘ অসুস্থতার পর ১৪ আগস্ট, ২০২৫ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। জীবদ্দশায় তিনি শুধু চিকিৎসক হিসেবেই নয়, ক্রীড়া জগতে তাঁর অবদান ও মানবিকতার জন্যও সকলের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫, কলকাতার সেন্ট থমাস চার্চে অনুষ্ঠিত হয় তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠান। দুপুর ২টায় বিশেষ মাসের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রার্থনায় অংশ নেন পরিবারের সদস্য, আত্মীয়, বন্ধু, সহকর্মী ও অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী। বিকেল ৩টায় তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন শত শত মানুষ। চার্চের শান্ত পরিবেশে শোকের আবহ ছড়িয়ে পড়ে। সবার চোখে জল, কিন্তু মনে অগাধ শ্রদ্ধা—একজন মানুষকে যিনি সারাজীবন অন্যের জন্য বেঁচেছেন। ড. পেজের জীবন ছিল এক বিরল দৃষ্টান্ত। চিকিৎসক হিসেবে তিনি অসংখ্য মানুষের জীবন রক্ষা করেছেন। একইসঙ্গে ভারতের ক্রীড়াক্ষেত্রে তাঁর অবদান অমূল্য। খেলাধুলার প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও নিষ্ঠা তাঁকে আলাদা মর্যাদায় আসীন করেছে। তাই তাঁর প্রয়াণে শুধু পরিবার নয়, ক্রীড়া মহল ও চিকিৎসা জগতও গভীর শোকাহত। ‘Fill not your hearts with pain and sorrow, but remember me in every tomorrow’—নিজের জীবনের শেষ বার্তায় তিনি যেমন লিখে গিয়েছেন, ঠিক তেমনভাবেই উপস্থিত সকলে চেষ্টা করেছেন তাঁকে অশ্রুসিক্ত নয়, শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে। তাঁর আত্মত্যাগ, সরলতা আর কর্মনিষ্ঠার গল্প আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে। জীবন শেষ হয়ে গেলেও, ড. ভেস আগাপিতো পেজের স্মৃতি চিরকাল বেঁচে থাকবে। তাঁর স্নেহ, ভালোবাসা, ও কর্মপ্রেরণা আগামী প্রজন্মকে আলোকিত করে যাবে। মৃত্যুর মধ্যেও তিনি রেখে গেলেন জীবনের এক চিরন্তন বার্তা—অন্যের জন্য বেঁচে থাকাই আসল মানবিকতা। আজ তাঁকে বিদায় জানাল কলকাতা, কিন্তু তাঁর নাম, তাঁর অবদান, তাঁর আলো চিরকাল অম্লান থাকবে মানুষের হৃদয়ে।

